
চট্টগ্রামে চলমান মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার ‘বিজয় মঞ্চের’ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে নগরীর এম.এ.আজিজ ষ্টেডিয়াম চত্বরে বিজয় শিখা প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে বিজয় মঞ্চের’ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
সাবেক সিটি মেয়র এ.বি.এম. মহিউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিজয় মেলার শিখা প্রজ্জ্বলন শেষে বিজয় মঞ্চে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির ভাষনে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও মঙ্গল যাত্রায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মত বিশাল হৃদয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন-জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সার্বক্ষণিক লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে। আশা করি, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদ নিষ্ঠার সাথে এই পবিত্র কর্তব্য পালনে অগ্রবর্তী বাহিনীর ভূমিকা পালন করবে।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন আরো বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা পরবর্তী দীর্ঘ ২১ বছর বাংলাদেশকে পরিকল্পিতভাবে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। ইতিহাস বিকৃতির মধ্যে দিয়ে নতুন প্রজন্মকে বিপথগামী করা হয়েছিল। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে জিয়াউর রহমান মনপ্রাণ থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন না।তাকে পটিয়ার করলডেঙ্গা পাহাড় থেকে ডেকে এনে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষনা পাঠ করানো হলেও তিনি নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে বক্তব্য পাঠ করেন। পরে আমাদের দাবীর মুখে তিনি সেই ঘোষণাটি প্রত্যাহার পূর্বক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে ২৭ মার্চ বিকেলে ওই ষোষণা পত্রটি সংশোধনের মাধ্যমে নতুন করে পাঠ করতে বাধ্য হন।
স্বাধীনতার প্রথম ঘোষণাটি পাঠ করেছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এম.এ হান্নান। এই সত্যটিকে ঢেকে দেওয়ার জন্য ইতিহাসের বিকৃতি যারা ঘটিয়েছেন তাদেরকে ইতিহাসের আস্থাখুড়ে নিক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা দুর্বিনীত দুঃসময়ে বাংলাদেশের জেগে ওঠার শক্তি হিসেবে গর্জে উঠেছিল। এই বিজয় মেলা শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক আয়োজন নয় জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদক ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে বাঙালি জাতিস্বত্তার মুক্ত মঞ্চ। এই মঞ্চ শুধু বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে নয় বৎসরিক কার্যক্রম ও অভিযান অব্যাহত রাখবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ঘোষনা পত্র পাঠ করেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের কো-চেয়ারম্যান বদিউল আলম।
এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, সাবেক রাষ্ট্রদূত নুরুল আলম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক এম.এ. সালাম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব আহমেদুর রহমান ছিদ্দিকী, চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন প্রমুখ।
পরে বিজয় মঞ্চে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট এর উদ্যোগে উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। শেখ শহিদুল আনোয়ার ও তপন বড়ুয়ার পরিচালনায় উদ্দীপনামূলক সাংস্কৃকিত অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার বিজয় মঞ্চে স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এম.পি।