কামরুল ইসলাম দুলু, সীতাকুণ্ড :
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সোনাইছড়িতে কুলিং কর্ণার ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। স্ত্রীর পরকিয়া প্রেমের বলি হয়ে খুন হয়েছে ব্যবসায়ী আলমগীর। খুনের পর স্ত্রী রোমানাকে গ্রেপ্তার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ এ হত্যার রহস্য বেরিয়ে এসেছে বলে জানায়।
গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের গামীতলা (আবুল খায়ের স্টিল) নিজ বাড়ীর পিছনে নির্জন পুকুর পাড়ে দুৃর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হন এলাকার হাসেম মাস্টার বাড়ির আফাজউল্লার ছেলে।মোঃ আলমগীর (৩৬)।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ কামাল উদ্দিন বলেন- আলমগীর হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আমাদের সন্দেহ ছিল তার স্ত্রী রোমানা আক্তার রুমির উপর। তাই তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদের পর হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়। আমরা জানতে পেরেছি ৩/৪ মাস আগে কুমিরার রোমানার সাথে আলমগীরের বিয়ে হয় সামাজিক ভাবে। তার আগে থেকে অন্য এক ছেলের সাথে রোমানার প্রেম ছিল। এসএসসিতে ফেল করার পর পিতামাতা আলমগীরের সাথে রোমানার বিয়ে দিয়ে দিলেও তার সাথে প্রেমিকের (মামলার স্বার্থে নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ) প্রেমের সম্পর্ক অব্যাহত ছিল।
ওসি জানায়, বেশ কিছু দিন যাবত রোমানা তার স্বামীর কাছে এনড্রয়েড ফোন দাবী করলে স্বামী আলমগীর প্রথমে। ফোন কিনে দিতে চায়নি। পরে বেশি জোড়াজুড়িতে ফোন কিনে দেয়। ফোন পেয়েই রোমানা তার প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগ সৃষ্টি করে এবং সেই প্রেমিক যুবক নিয়মিত আলমগীরের অনুপিস্থিতিতে বাড়ীতে এসে রোমানার সঙ্গে দেখা করতো ও আসামাজিক কাজে লিপ্ত হত। ওসি জানায়, খুনের ৪ দিন আগ থেকে আলমগীরেকে হত্যার পরিকল্পনা করে। প্রেমিক ছেলেটি যখন রোমানাকে পালিয়ে যাওয়ার চাপ দেয় তখন রোমানা তাকে শর্ত জুড়ে দেয় তুমি আলমগীরকে হত্যা করে আমাদের মাঝ থেকে সরিয়ে দিতে পারলে তোকে বিয়ে করবো। পরে প্রেমিক যুবক আলমগীরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এবং ঘটনার দিন প্রেমিক রোমানার স্বামী আলমগীরকে হত্যা করেই রোমানাকে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছিল। আমি আলমগীরকে হত্যা করেছিল। তুমি পালিয়ে চলে এসো। কিন্তু হত্যার ঘটনা জানাজানি হয়ে যাওয়ায় রোমানা বাড়ী থেকে পালাতে পারেনি। তার আগেই পুলিশ পৌছে যায় দাবী ওসির। ঘটনার দিন রাতে আলমীগর শীতলপুর চৌধুরী ঘাটাস্থ চায়ের দোকান (কুলিং কর্ণার) থেকে বাড়ীর উদ্দেশ্যে বের হওয়ার পরপরই খুনি চক্র তাকে পাহারা দিয়ে বাড়ীর পিছনে হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডে রোমানার প্রেমিক ছাড়াও তার ভাড়া করা লোক জড়িত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে নিহত আলমগীর এক বছর আগে বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসে। এর পর প্রথমে নিজ এলাকা গামারী তলায় মসজিদের পাশে একটি মুদির দোকার দেয়। মাত্র ৩ মাস আগে সে বিয়ে করে। বিয়ের পর পার্শ্ববর্তি শীতলপুর চৌধুরীঘাটা এলাকায় কুলিং করার দেয়। ২৩ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে সে দোকার বন্ধ করে গ্রামের পথ দিয়ে বাড়ী ফেরার পথে হত্যাকাণ্ডে শিকার হয়।