চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালী এলাকায় রোকসানা বেগম নামের এক গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় আদালত মো. সোহেল (৩৫) নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। একই রায়ে অন্য ধারায় আদালত তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ারও আদেশ দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ বেগম সিরাজাম মুনিরার আদালত এ রায় দেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মো. সোহেল (৩৫) চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জামাল উদ্দীনের ছেলে।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর বিহি চক্রবর্তী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,আসামি মো. সোহেলের বিরুদ্ধে গৃহবধূ খুনের ঘটনায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে দণ্ডবিধির ৩৯৪ ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৩ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল দুপুরে নগরীর কোতোয়ালী থানার কোরবানীগঞ্জ তৈলপট্টি রোডের একটি ভবনে রোকসানা বেগমের বাসায় ঢুকে চাকু ও খেলনা পিস্তল বের করে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে সন্ত্রাসী সোহেল। পরে রোকসানা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে সোহেল। রোকসানাকে হত্যার পর তার ছেলে আবদুল আজিজকেও উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। ঘরের কাজের বুয়া বিষয়টি দেখে ফেললে তাকে ভয় দেখিয়ে ওয়াশরুমে আটকে রাখে। এরপর আলামত নষ্ট করার জন্য রান্নাঘর থেকে আগুন এনে শোয়ার ঘরের বিছানা ও বালিশে আগুন ধরিয়ে দেয়। চলে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসী সোহেল বাসায় থাকা ল্যাপটপ, মোবাইলসহ স্বর্ণালংকার ব্যাগে ভরে নিয়ে যায়।
পালিয়ে যাওয়ার সময় আবদুস সোবহান নামে এক পথচারী সোহেলকে বাধা দেন। এ সময় সে তাকেও ছুরিকাঘাত করে। ঘটনার পরদিন রোকসানার স্বামী আবুল কাশেম কোতোয়ালী থানায় একজনকে অজ্ঞাত পরিচয়ের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ সোহেলকে আসামি করে একই বছরের ২০ জুলাই তৎকালীন কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়।