নিজেদের জমি-জমা না থাকায় মৃত মায়ের কবর দিলেন বসতঘরের বারান্দায়। আর এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভোলার দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়নের আজিমউদ্দিন গ্রামের সর্দার বাড়ি।
মৃত জবেদা খাতুনের বড় ছেলের দাবি, তার বাবার কবর চাচাতো চাচার জমিতে (কবরস্থান) দেয়া হয়েছিল। এজন্য চাচার পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে নানা কটূক্তি শুনতে হচ্ছে। আর মা মারা যাওয়ার পর সেই জায়গাও মেলেনি। তাই বাধ্য হয়ে মায়ের কবর বসতঘরের বারান্দায় দিয়েছেন।
মৃত জবেদা খাতুনের ছেলে রিকশাচালক রফিজল ও দিনমজুর আজিজল ইসলাম জানান, বসতঘর ছাড়া তাদের আর জমি নেই। চাচার জমিতে তার বাবার কবর দেয়ায় কটূক্তিমূলক কথা শুনে মা জবেদা তার মৃত্যুর পর নিজের জমি ছাড়া অন্যের জমিতে কবর না দিতে অনুরোধ করেন ছেলেদের।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেলে বার্ধ্যক্যজনিত রোগে মারা যান জবেদা খাতুন। পরে রফিজল ও আজিজলের চাচা এবং চাচাতো ভাইয়েরা তাদের জমিতে জবেদা খাতুনকে কবর দিতে নিষেধ করেন। এছাড়া তারা মৃত জবেদাকে এক নজর দেখতেও আসেননি। এতে অভিমানে বুধবার সকালে বসতঘরের বারান্দায় মাকে কবর দেন তার ছেলেরা।
এদিকে মৃত জবেদা খাতুনের দেবর মো. খোরশেদ আলম জানান, তার ভায়ের সন্তানরা তার কথা শোনে না। তাই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। বলেন, আমাকে তো কিছুই বলেনি।
এদিকে এ ঘটনার পরে এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। ওই মৃত মায়ের গরীব সন্তানদের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয়রা। আর স্থানীয় এলাকাবাসীরা চাঁদা তুলে কবর স্থায়ীভাবে পাকা করতে কাজ শুরু করেছেন। এবিষয়ে স্থানীয় একজন বলেন, উপায় না পেয়েই তারা ঘরে কবর দিয়েছে। পরিবারটি খুবই অসহায়। আমরা স্থানীয়রা চাঁদা তুলে কবরটি পাকা করে দেয়ার ব্যবস্থা করছি।
তবে দৌলতখান থানার ওসি সত্য রঞ্জন খাসকেল লোকমুখে বিষয়টি শুনে দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, তাদের কাছে সহযোগিতা চাইলে পুলিশ তাদের সব ধরণের সহযোগিতা করবে। এছাড়াও তিনি জবেদা খাতুনের পরিবাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন বলে জানান।