
সাবেক আলোচিত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার সন্দেহভাজন মূল আসামী মুসাকে পাওয়া না গেলে তাকে অনুপস্থিত দেখিয়েই মিতু হত্যা মামলার চার্জশীট দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক।
বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে সিএমপি’র বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুলিশ সমাবেশে যোগ দিয়ে সেন্ট্রাল লাইব্রেরী ও হেয়ার ষ্টাইল উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

স্বামী বাবুল আক্তারকে মিতু হত্যায় গ্রেফতার দেখানো হবে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে পুলিশের মহাপরিদর্শক আরো বলেন, বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার করার মতো প্রমাণযোগ্য কোন অভিযোগ এখনো পাওয়া যায়নি। পাওয়া গেলে অবশ্যই তাকে গ্রেফতার করা হবে।
এর আগে সিএমপির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুলিশ সমাবেশে তিনি বলেন, এটি পুলিশের ট্রেডিশনাল প্রতিযোগিতা। খেলার মধ্যে প্রতিভা বিকশিত হয়। পুলিশের সাথে সুশীল সমাজের সংযুক্তি এ প্রতিভাকে আরো বিকশিত করবে।
আওয়ামী লীগের সাংসদ মনজুরুল ইসলাম লিটন খুনের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, লিটন খুনের মূল পরিকল্পনাকারী জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল আবদুল কাদের খান।
আবদুল কাদের খান খুনের মূল পরিকল্পনাকারী। তার ইচ্ছা ছিল লিটনকে যদি সরিয়ে দেয়া যায়, তাহলে তার পথ পরিস্কার হবে এবং পরবর্তীতে এমপি হতে পারবে।

এদিকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল কাদের খানকে মঙ্গলবার তার বগুড়ার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আজ বুধবার তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
দেড় মাসের তদন্তে খুনি ও খুনের পরিকল্পনাকারীকে শনাক্তের কথা জানিয়ে আইজিপি আরো বলেন, বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই, আমরা যাদের শনাক্ত করেছি তারাই খুন করেছে এবং খুনের পরিকল্পনা করেছে। তিনি সেদিনের ঘটনারর কথা উল্লেখ করে বলেন, তিনজন কিলার মোটর সাইকেলে করে লিটনের বাড়িতে গেছে। গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। সেই মোটর সাইকেলসহ তিনজন কিলারকে গ্রেফতার করা হলে দুইজন গতকাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। তিনি আরো বলেন,আরেকজন গ্রেফতার হয়েছে, তাকেও আমরা জবানবন্দি নেয়ার জন্য পাঠাব। কর্ণেল কাদের সাহেবকে গ্রেফতার করেছি, তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করব।
খুনের পর জামায়াতকে দায়ী করা হয়েছিল কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সুন্দরগঞ্জে জামায়াত ২০১৩ সালে ৪ জন পুলিশকে হত্যা করেছিল। সে সময় গাইবান্ধায় যারা নাশকতা করেছে, হত্যাকান্ড করেছে তাদের সবাই জামায়াতের। জামায়াতকে সন্দেহ করাটা স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে পুলিশ এ হত্যা মামলার তদন্তে শতভাগ পেশাদারিত্ নিয়ে কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ডা. কাদের খানের বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটি ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপড়হাটি খানপাড়া গ্রামে। ২০০৮ সালে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে তিনি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন।
অনুষ্ঠানে এসময় সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহারও তার সঙ্গে ছিলেন।