পারিবারিক কলহের জেরে চট্টগ্রামে স্বামীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার স্ত্রী লিজা আক্তারকে আসামি করে মামলা করে। পরে লিজা আক্তারকে (২৩) গ্রেফতার করে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) রাতে নগরীর বাকলিয়া থানার আব্দুল লতিফ হাটখোলা এলাকার বাসা থেকে লিজা আক্তারকে গ্রেফতারের পর পুলিশ জানিয়েছে, লিজা হত্যার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন।
এর আগে সোমবার রাত সোয়া ১০টায় অসুস্থ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর সোহেলকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সোহেল বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে। বাবা-মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা বাকলিয়া এলাকায় থাকলেও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আব্দুল লতিফ হাটখোলা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। তার ছয় বছর ও তিন বছর বয়সী দুটি মেয়ে রয়েছে।
পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে অসুস্থ অবস্থায় সোহেলকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন লিজা ও তার পরিবারের সদস্যরা। সেখানে সোহেলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। খবর পেয়ে সোহেলের বাবা ও ছোট ভাই হাসপাতালে গেলে তারা তার বুকে, পিঠে ও গলায় আঘাতের দাগ দেখতে পান। এ ঘটনায় পরদিন পুত্রবধূর বিরুদ্ধে মামলা করেন সোহেলের বাবা আব্দুস সালাম।
মামলার এজাহারে আব্দুস সালাম উল্লেখ করেন, ২০১৫ সালে সোহেলের সঙ্গে লিজার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। স্ত্রীর চাপে দুই বছর আগে শ্বশুরবাড়ির পাশে আলাদা বাসা নিয়ে থাকতে শুরু করেন সোহেল। সেখানেও তাদের মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে ঝগড়া হতো। এর জেরে সোহেলকে পরিকল্পিতভাবে শারীরিক নির্যাতন ও শ্বাসরোধে হত্যা করেন লিজা।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম জানান, সোহেলকে মারধরের পর তার স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর সোহেলের পরিবারকে খবর দেয়া হয়। কিন্তু বাবা ও ছোট ভাই হাসপাতালে গিয়ে সোহেলকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান।
মঙ্গলবার তার বাবা আব্দুস সালাম বাদী হয়ে পুত্রবধূ লিজা আক্তারকে আসামি করে একটি মামলা করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অপরেশন) সাজেদ কামাল বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে লিজাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কথা এলোমেলো মনে হয়। একপর্যায়ে তিনি খুনের কথা স্বীকার করেন। বলেন, সাংসারিক বিষয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে সোহেলকে শ্বাসরোধ করেন তিনি। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মারা যান সোহেল।