চট্টগ্রামে শিশু আলীনা ইসলাম আয়াতকে ৬ টুকরো করে হত্যার ঘটনায় একমাত্র আসামী আবীর আলীকে ৭ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
দুই দিনের রিমাণ্ড শেষে আজ সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করে দ্বিতীয় দফায় ১০ দিনের রিমাণ্ডের আবেদন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শুনানীকালে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালত ৭দিনের রিমাণ্ড করেন।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট সেলিম উল্লাহ চৌধুরী বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভিযুক্ত আবীর আলীর ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ২৬ নভেম্বর বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাদ্দাম হোসেনের আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন।
এদিকে সকালে ঘাতক আবীর আলী কড়া নিরাপত্তায় আদালত প্রঙ্গণে হাজির করা হয়। তার আগেই সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষ আদালত এলাকায় ভিড় করে। দুপুরে পুলিশের ভ্যান থেকে আসামী আবীর আলীকে নামানোর চেষ্টাকালে মানুষ তার ফাঁসির দাবী করে শ্লোগান দেয়। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের কাছ থেকে আসামীকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটুনী দেয়ার চেষ্টা করে। এসময় আসামীকে প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে আদালতে নিয়ে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক মনোজ কুমার দে জানান, আলীনা ইসলাম আয়াতকে অপহরণের পর মরদেহ কেটে ছয় টুকরা করে সাগরে ভাসিয়ে দেয়। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে আবীর একই দাবি করেছে। ঘটনাস্থল চিনিয়ে দিতে রাজি হলে আবীরকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়। তার দেখানোমতে আবার তল্লাশি করা হয়। তবে কোনো দেহাবশেষ উদ্ধার করা যায়নি। পরে আবীরের মায়ের বাসায় তল্লাশি করে একটি ডায়েরি পেয়েছি।
রবিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে আবীর আলীকে সঙ্গে নিয়ে পিবিআই সদস্যরা বে-টার্মিনাল এলাকায় সাগরতীরে প্রায় তিন ঘণ্টা তল্লাশি চালায়। কিন্তু আয়াতের দেহের খন্ডিত কোন অংশ পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত ২৫ নভেম্বর আসামি আবীরকে নিয়ে নগরের বিভিন্ন আকমল আলী সড়কের স্লুইস গেট সংলগ্ন নালায়সহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালায় পুলিশ।
প্রসঙ্গত গত ১৫ নভেম্বর নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলার এলাকার নয়ারহাট বিদ্যুৎ অফিস এলাকার বাসা থেকে পার্শ্ববর্তী মসজিদে আরবি পড়তে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয় আলিনা ইসলাম আয়াত (৫)। এর পরদিন শিশুর বাবা সোহেল রানা এ ঘটনায় ইপিজেড থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করে। নিখোঁজের ১০ দিনের মাথায় ২৪ নভেম্বর রাতে শিশু আয়াতকে খুনের মামলায় আবীরের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায় পুলিশ। রাতেই তাকে গ্রেফতার করে পিবিআই। পরে আকমল আলী সড়কে তার মায়ের বাসার সামনে একটি ঝোপ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বঁটি উদ্ধার করা হয়। এছাড়া আয়াতের বাসার পাশে কবরস্থানে আয়াতের পায়ের স্যান্ডেলও উদ্ধার করা হয়।