তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মানবাধিকার একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। মানবাধিকারের কথা বলে কোনো কোনো দেশকে দমন করে রাখার চেষ্টা করা হয়। দেশে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, অথচ বিবৃতিজীবীরা হারিয়ে গেছে। বিশ্ব মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চক্রান্ত হচ্ছে।
তিনি আজ শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কোনো কোনো সন্ত্রাসীর মানবাধিকার নিয়েও কেউ কেউ সোচ্চার হয়। কিন্তু সেই সন্ত্রাসী যে এত মানুষ মারল, সেটি নিয়ে কোনো কথাবার্তা নাই এবং পৃথিবীতে কিছু মানবাধিকার সংগঠন আছে, যেগুলো মূলত মানবাধিকারের ব্যবসা করে। যে সমস্ত বিশ্ববেনিয়া মানবাধিকারের কথা বলে এবং বাংলাদেশেও যারা মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেন, ফিলিস্তিনে পাখি শিকার করার মতো মানুষ শিকার করা হচ্ছে, সাধারণ মানুষসহ দশ হাজারের বেশি নারী ও শিশুকে হত্যা করা হলো, কিন্তু এটি নিয়ে বড় বড় সংগঠনগুলোর কোন কথা ও বিবৃতি নেই। অথচ তারা বরিশালে একজন আরেকজনকে ঘুষি মারল এবং কোথায় কিছু মানুষ একজনকে ধাওয়া করল সেজন্য বিবৃতি দিল। আমি কথাগুলো বলছি, কারণ আগামী পরশু দিন ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে ১৯৭৫ সালে, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বেই ইন্ডিমিনিটি অধ্যাদেশ এবং সেটিকে আইনে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করা। দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ১৯৭৭ সালে, নির্বিচারে সেনা অফিসার ও বিমান বাহিনীর অফিসারদেরকে বিনা বিচারে হত্যা করা। একজনের নামের সাথে আরেকজনের মিল আছে, সেজন্য ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়া হয় এবং ফাঁসি কার্যকর হবার পর রায় হয়েছে ফাঁসির, এমন ঘটনাও আছে। তারপর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব। এগুলো চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা।
তিনি বলেন, কিছু বিবৃতিজীবী আছেন, বিবৃতি দেওয়ায় তাদের পেশা। বাংলাদেশেও কিছু বিবৃতিজীবী আছেন। ইদানিং অবশ্য তাদের দেখা যাচ্ছে না, বিবৃতিজীবীরা বেশিরভাগ হারিয়ে গেছেন। দেশে যেভাবে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, সবসময় যারা এ ধরনের বিবৃতি দেন, তাদের বিবৃতি এখন দেখতে পাচ্ছি না। এই বিবৃতিজীবীরা কই ? জনগণ এদের খুঁজছে, আমিও তাদের খুঁজছি। আমি একটু উদ্বিগ্ন তাদের জন্য। তারা জ্বর কিংবা ডেঙ্গুতে আক্রন্ত হলো কিনা তা নিয়ে মানুষ চিন্তায় আছে।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলামের সঞ্চালনায় ও সভাপতি তপন চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ শহীদুল আলম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আলী আব্বাস, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কলিম সরওয়ার, সিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, সিনিয়র সহসভাপতি রুবেল খান, সহসভাপতি অনিন্দ্য টিটু, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক প্রমুখ।