ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :
জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ কার্যক্রমের আওতায় সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় উপজেলা পর্যায়ে ফটিকছড়িতে নির্বাচিত জয়িতা সম্মাননা পেয়েছেন কাউন্সিরর ফিরোজা বেগম।
আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস-২০২৩” উদযাপন উপলক্ষে ৯ ডিসেম্বর ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় আয়োজীত উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচিত জয়িতাদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে কাউন্সিরর ফিরোজা বেগমসহ ৫ জনকে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সভাতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত), জেবুন নাহার মুক্তা। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ছফি উল্লাহর সঞ্চালনায় সংবর্ধিত অতিথিবৃন্দ ছাড়াও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে একটানা ৩০ বছরেরও বেশি সময় পার করছেন ফিরোজা বেগম। ফটিকছড়ি পৌরসভার( ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ড) সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ফিরোজা বেগম।
দীর্ঘ যাত্রায় তিনি নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে মানুষের ভালবাসার জনপ্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় পেয়েছেন। এলাকার কারো কাছে তাঁর কথা তুলে ধরলেই এক বাক্যে বলে উঠেন তাঁর মতো জনপ্রতিনিধি হয়না। তাঁকে সবসময় আমরা পাশে পাই।
ফিরোজা বেগম ফটিকছড়ি উপজেলার সাবেক ধুরুং ইউপির (বর্তমান ফটিকছড়ি পৌরসভা) এ-ওয়ার্ডের নূর আহমদ সুফি বাড়ির মৃত রশিদ আহমদ সওদাগর ও রশিদা খাতুন দম্পতির মেয়ে। ১৯৬৮ সালের ১ ডিসেম্বর মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন।
লেখাপড়া অবস্থায় থেকে এলাকার বিভিন্ন পরিবারের ছেলেমেয়েদের পড়ানো থেকে শুরু করে সেবামূলক কাজে নিজেকে জড়িয়ে নেন।
১৯৮৭ সালে সমাজসেবা অধিদপ্তরে চাকরি নিয়ে প্রথমে একটি মাতৃকেন্দ্রের সম্পাদক ও পরে মাঠকর্মীর দায়িত্ব পালন করেন।
পরবর্তী এলাকাবাসীর চাওয়ায় ও এলাকাবাসীর সেবা করার প্রবল ইচ্ছায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদ সৃষ্টি হলে জনপ্রতিনিধি হতে প্রার্থী হন তিনি।
সাবেক ধুরুং ইউনিয়নের এ-ওয়ার্ডের (১,২,৩) নারী সংরক্ষিত মেম্বার পদে প্রথমবারের মত নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে গোলাপ ফুল মার্কা নিয়ে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন । এরপর থেকে কখনো হারতে হয়নি তাকে। সে থেকে ৪ বার ইউপি সংরক্ষিত মেম্বার ও ফটিকছড়ি পৌরসভা ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ড থেকে তিনবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। পাশাপাশি বর্তমানে তিনি ফটিকছড়ি পৌরসভার তৃতীয় বারের মতো প্যানেল মেয়রের দায়িত্বও পালন করছেন।
এছাড়া তিনি ধুরুং কে এম টেক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি,আনোয়ার আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য,ফটিকছড়ি উপজেলা আইন-শৃংঙ্খলা কমিটির সাবেক সদস্য,ফটিকছড়ি থানা মহিলা মেম্বার সমিতির সাবেক আহবায়ক,উপজেলা হাসপাতাল ব্যাবস্থাপনা কমিটির সাবেক সদস্য,ফটিকছড়ি উপজেলা নারী উন্নয়ন ফোরামের সাবেক সাধারন সম্পাদক,ফটিকছড়ি পৌরসভা কিশোর-কিশোরী ক্লাবের সভাপতি,ফটিকছড়ি ক্রিড়া সংস্থার নির্বাহি সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং করছেন।
সাধারন জীবন যাপনে অভ্যস্ত ফিরোজা বেগম। সাধারন জনগনও মনখোলে কথা বলতে পারে তাঁর সাথে। পথে ঘাটে অফিসে যে যেখানে সেবা নিতে আসে সাধ্যমতে সেবা দিতে চেষ্টা করেন তিনি। বিবিরহাট বাজারে ভাইয়ের দোকানের অফিসে বসে রাত পর্যন্ত এলাকাবাসীকে সেবা দিতে দেখা যায়।
ফিরোজা বেগমের ভাই মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন,জনগনকে সেবা দিতে আপাকে কোনদিন অবহেলা করতে দেখিনি। যে কোন দুর্যোগেও ছুটে যান তিনি। এলাকাবাসীর খবরাখবর নেন। সাধ্যমতে সহযোগীতা করেন। আমাদের পুরো পরিবারকে তিনি এলাকাবাসীর সেবার কাজে ব্যবহার করান।
কাউন্সিলর ফিরোজা বেগম বলেন, এ সম্মননা আমার এলাকাবাসীর। আমি সকলের নিকট কৃতজ্ঞ প্রকাশ করছি।
তিনি সমাজকর্মে মাদার তেরেসা ও প্রিন্সেস ডায়নাকে অনুসরণ করতেন ও করে যাচ্ছেন বলেও জানান। সারাজীবন মানুষের সেবায় কাটিয়ে দিতে চান তিনি।
ফিরোজের বেগম এ সম্মাননা অর্জনে বিভিন্ন সংগঠন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অভিনন্দন জানিয়েছেন।