ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির আসন ভাগাভাগির বিষয়টি শুক্রবার পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতে সমঝোতা ছাড়াই শেষ হয় দল দুইটির তৃতীয় দফার বৈঠক।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) চতুর্থ দফায় সরকারি দল ও বিরোধী দল বৈঠক করে আসন ভাগাভাগি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে।
বৃস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ ভবনে শুরু হয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির বৈঠক। যা চলে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। যেখানে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পৌঁছাতে পারেনি দল দুইটি। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, জাতীয়পার্টির সঙ্গে কোন ধরনের সমঝোতা ছাড়াই বৈঠক শেষ হলো। শনিবার সন্ধ্যায় আবারও বসব। সেখানেই ফাইনাল সিদ্ধান্ত হবে।
তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে অনেক ধরণের কথাবার্তা হয়েছে। কিছু জটিলতা রয়েছে। এ নিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে শনিবার।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেন, আমি বৈঠকে অল্প সময় ছিলাম। পরে চলে আসছি। সিদ্ধান্ত হবে পরে।
বৈঠক নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের আসন বণ্টনের ফাইনাল হয়নি। শনিবার বলতে পারব।
এর আগে মঙ্গলবার রাতেও বনানীর একটি বাড়িতে দল দুইটির মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুই পক্ষের এই বৈঠকে আওয়ামী লীগের মধ্যে ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক (চুন্নু) ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক এই অনুষ্ঠিত হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম একজন সদস্য বলেন, আসন সমঝোতা এবার কিছুটা জটিল হয়েছে। আওয়ামী লীগও ছাড় দিতে চাচ্ছে না। আমরা দর কষাকষি করে যাচ্ছি। আড়ালে থেকে পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের অনেক চেষ্টা করছেন আসন বাড়িয়ে নিতে। এক তরফা নির্বাচনেই যেহেতু যাচ্ছি; সেহেতু আসন বাড়ানোই মুখ্য। আশা করি আওয়ামী লীগ তাদের প্রতিশ্রুতি রাখবে।
আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, আসন ভাগাভাগি আজকের মধ্যে চূড়ান্ত ফয়সালা হতে হবে৷ আমরা চাচ্ছি যেকোনোভাবে আসন বাড়িয়ে নিতে। এবার কিছুটা জটিলতা রয়েছে। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ নানা বিষয় সামনে এসেছে৷
আর কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, আমরা কিছু না। অন্ধকারের মধ্যে আছি। ২০০৮ সাল থেকেই ১৪ দল ও আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে আসছে। তিনটি জাতীয় নির্বাচনের দুটিতে জোটের শরিক হিসেবে ছিল জাতীয় পার্টিও।
তিনি বলেন, তবে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের বর্জনের পর জাতীয় পার্টি জোটে ছিল না। এবারও বিএনপি ভোটে আসেনি, জাতীয় পর্টিকেও জোটে রাখা হয়নি। ২০১৪ সালে জোট না থাকলেও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছিল এমন ৩৪টি আসনে প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। সেসব আসনেই জয় পায় দলটি। একাদশে জোট করার পর তাদেরকে দেওয়া হয় ২৬টি আসন, এর মধ্যে তারা জয় পায় ২৩টিতে। এবার দলটিকে কোথাও ছাড় দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেনি আওয়ামী লীগ।