মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্বরণ সভায় বক্তব্য রাখছেন, আ জ ম নাছির উদ্দিন।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর অঙ্গুলি হেলনে ও গর্জনে বীর বাঙালি যেভাবে জেগে উঠেছিল এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপ দিয়েছিল তেমনি চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের অধিকার রক্ষায় এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী জননেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর আহ্বানে চট্টগ্রাম বার বার জেগে উঠেছে। একইভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি রুখে দাঁড়াও বলার সাথে সাথে চট্টগ্রামবাসী রুখে দাঁড়িয়েছে। তাই মহিউদ্দিন চৌধুরীর কাছে চট্টগ্রামবাসী চিরঋণী। তাঁর শূন্যতা কখনো পূরণ না হলেও আমরা অপেক্ষায় আছি একজন মহিউদ্দিন চৌধুরীর মত জননেতার জন্য।
তিনি শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে সাবেক চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি চট্টলবীর মরহুম এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকীতে নগরীর স্টেশন রোডস্থ পর্যটন হোটেল সৈকত মিলনায়তনে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আমার পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর মরহুম জহুর আহমদ চৌধুরীর অনন্য সৃষ্টি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। আমার বাবার কাছেই দীক্ষিত এই ত্যাগী জননেতার জন্য শুধু আমি নই, সমগ্র চট্টগ্রামবাসী গর্বিত। তিনি চট্টগ্রামের নেতা হলেও একজন জননেতা হিসেবে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত পরিচিতি পেয়েছিলেন। এটাও চট্টগ্রামবাসীর সৌভাগ্য।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন প্রয়াত জননেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী পরিষদে জননেত্রী শেখ হাসিনা মহিউদ্দিন ভাইকে সভাপতি ও আমাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হলে মহিউদ্দিন ভাইয়ের মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর সাথে আমি কাজ করেছি। একটা বিষয় আমাকে মুগ্ধ করেছে এজন্যই মতভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও মহিউদ্দিন ভাই কখনো দলের সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনার বাইরে যাননি। আমরা দুজন মিলেমিশে একসাথে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগকে মজবুত ভিত্তি তৈরি করতে পেরেছি।
তিনি আরো বলেন, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী জনগণের সাথে দলের সেতুবন্ধ তৈরি করেছেন। তিনি জনগণের চাওয়া-পাওয়া ও মুখের ভাষা বুঝতেন এবং মানুষের শিরা-উপশিরার প্রবহমান রক্তের উত্তাপ অনুভব করতেন। এ কারণে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগকে চট্টলবাসীর আশা-আকাক্সক্ষার মঞ্চে পরিণত করে গেছেন। সর্বোপরি যে কোন সময় মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মহিউদ্দিন চৌধুরী ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সাহসের ঠিকানা হয়ে উঠে। তিনি মহিউদ্দিন চৌধুরীর রাজনৈতিক জীবন এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা ও কর্তব্যবোধের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষা পূরণে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা যাকেই নৌকা প্রতীক দিয়েছেন তাকে বিজয়ী করার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগের নির্দেশনা দেন। এছাড়াও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক ভাবে সম্পন্ন হয় সেই লক্ষে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে টেনে আনার জন্য তাদের ঘরে ঘরে গিয়ে উর্দ্বুদ্ধকরণের জন্য বিশেষভাবে নির্দেশনা প্রদান করেন।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলহাজ নঈম উদ্দীন চৌধুরী, এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন, আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন চৌধুরী, উপদেষ্টা একেএম বেলায়েত হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান, হাসান মাহমুদ হাসনী, দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ হাসান মাহমুদ শমসের, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী,তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী। সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ এমপি, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আলহাজ্ব সফর আলী, শেখ মোহাম্ম ইসহাক, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য হাজী মোঃ হোসেন, দিদারুল আলম চৌধুরী, জালাল উদ্দিন ইকবাল, ইঞ্জিনিয়ার মানস রক্ষিত, উপসম্পাদক শহিদুল আলম, নির্বাহী সদস্য সৈয়দ আমিনুল হক, বখতিয়ার উদ্দিন খান, জাফর আলম চৌধুরী, ইঞ্জি: বিজয় কিষান চৌধুরী, হাজী বেলাল আহমদ, মোরশেদ আক্তার চৌধুরী এছাড়া ১৫টি থানা, ৪৪ সাংগঠনিক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে খতমে কোরআন, দোয়া, মিলাদ মাহফিল, কবর জিয়ারত শেষে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়।