মানিকগঞ্জ জেলার সদর উপজেলাধীন দীঘি ইউনিয়নের ভাটবাউর গ্রামে লোকালয় ও সাধারণের চলাচলের রাস্তার পাশে অনুমোদন ছাড়াই পোল্ট্রি খামার করার অভিযোগ উঠেছে।
এলাকার সদর উদ্দিন নামে এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে বেআইনী ভাবে এই খামার করার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।
জানা গেছে সদর উদ্দিনের ভাই রবিউল হাসান আব্দুল স্থানীয় রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকায় তার প্রভাবে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে পরিবেশ বিনষ্টকারী পোল্ট্রি ফার্ম তৈরি করেছেন তিনি। এলাকাবাসী লোকালয়ে পোল্ট্রি ফার্ম না দিতে অনুরোধ করলেও তিনি তা আমলে নিচ্ছেন না।
গ্রামের এই সড়ক দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। এছাড়া পোল্ট্রি ফার্ম সংলগ্ন এলাকাটি ঘন জনবসতিপূর্ণ। এখানে পোল্ট্রি ফার্ম চালু করা হলে এর আশপাশের জনবসতি এলাকায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠবে। ফার্মের ২০০ মিটারের মধ্যে ভাটবাউর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। এখানে প্রায় হাজার খানেক ছাত্রছাত্রী পড়ালেখা করে। মুরগির বিষ্ঠার গন্ধে আশপাশের লোকজনের শারীরিক অসুস্থতাসহ স্কুলগামী ছেলেমেয়েদের নানা ধরনের অসুবিধা হবে।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় অসন্তোষ বিরাজ করছে। সদর উদ্দিন প্রকাশ সদা এবং তার ভাইয়েরা উগ্র মেজাজের এবং রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী হওয়ায় এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
ভাটবাউর গ্রামের রূপচাঁন খলিফার মেজ ছেলে সদর উদ্দিন ডাকনাম সদা। সুবিধাবাদী সদা এলাকায় কূট-কৌশল খাটিয়ে বিভিন্ন লোকের মাঝে বিবাদ বাঁধায় এবং শালিশে গিয়ে অযাচিত প্রভাব খাটায় বলে স্থানীয়রা তাকে তেমন ভালো চোখে দেখে না। ঢাকায় ব্যবসাতে লস করে এসে সদা স্থানীয় কিশোর গ্যাং লিডার মাদক ব্যবসায়ী সাদিকুল ইসলাম রাব্বির সাথে বিশেষ সখ্যতা গড়ে তোলে এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে চেষ্টা করছে।
ভূমিদস্যু সদা তার আপন মামাতো ভাইদের জমি দখলে রেখে আত্মসাৎ করতে চেষ্টা করছে। সদা গত ৪ মে ২০২৩ তারিখে উক্ত জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রকাশ্য দিবালোকে দীঘি ইউনিয়ন পরিষদের ০৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার আবু তাহের লিটনের সামনে মামাতো ভাই তমছের ড্রাইভারের ছেলেকে মারধোর করে হাত ভেঙে দেয়। সদা ও আব্দুল তাদের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এ ঘটনার বিচার হতে দেয়নি। মামাতো ভাইয়েরা তাদের জমি ফেরতের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও কোনো সুরাহা করতে পারেনি। এসব কারনে স্থানীয়রা গত ইউপি নির্বাচনে সদার ভাই মেম্বার প্রার্থী রবিউল হাসান আব্দুলকে ভোট দেয়নি। সদা ও তাদের পরিবার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় আগামীতেও তারা আব্দুলকে ভোট দিবে না বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।
নিয়ম অনুযায়ী, জনবসতি এলাকার ৫শ’ গজ দূরে মুরগি ও ডিম উৎপাদন করার ফার্ম করতে হবে। পোল্ট্রি ফার্ম দেয়ার আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে রেজিস্ট্রেশন নেয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও সদা এসব নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে রাস্তার পাশে জনবসতি এলাকায় ফার্ম করতেছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যকরী ব্যবস্থা না নিলে এলাকাবাসী পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার, উপজেলা নির্বাহি অফিসার, উপজেলা সেনেটারী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন।