চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, ৭১র মুক্তিযুদ্ধে সাহসী ভুমিকা পালনকারী নারী মুক্তিযোদ্ধা মর্জিনা বেগম ইন্তেকাল করেছেন।
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় নগরীর একটি বেসরকারী হাসপাতালে ৮১ বছর বয়সে এই মহীয়সী নারী মারা যান। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।
মৃত্যুকালে তিনি ২ ছেলে ২ মেয়ে বহু আত্মীয় স্বজন গুণাগ্রাহী রেখে যান।
তিনি নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম শামসুল আলম এর স্ত্রী এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ পরিবারের সংগঠক নওশাদ মাহমুদ চৌধুরী রানা ও বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সংসদের উপ- পাঠ ও বস্ত্র বিষয়ক সম্পাদক তারেক মাহমুদ পাপ্পু এর মমতাময়ী মা।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় ঈদগাহ বউবাজার বটতলে অনুষ্ঠিত হবে। এর পর বাদ জোহর চান্দগাঁও থানার গোলাম আলী নাজির বাড়ী নিজস্ব বাড়ীতে ২য় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরাস্থানে মরহুমাকে দাফন করা হবে।
মরহুমা মর্জিনা বেগম একাত্তর সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সাহসী ভুমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় মুক্তিযুদ্ধাদের খাবার ও আশ্রয়সহ সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিয়েছেন। মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে অর্থ সংগ্রহ করেছেন মুক্তিযুদ্ধের জন্য। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর চোখ এড়াতে কখনো সেজেছেন ভিক্ষুক, কখনো পাগল। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা আলোড়িত করে সে সময়ের ২২ বছর বয়সী গৃহবধু মর্জিনা বেগমকে। দেশের জন্য কাজ করার অদম্য ইচ্ছা জেগে উঠে তার মধ্যে। সদ্যজাত সন্তানকে দোলনায় ঘুম পাড়িয়ে ছুটে যান মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায়। যোগদেন গেরিলা যোদ্ধা মৌলভী সৈয়দের সাথে। ভিক্ষুক সেজে অর্থ জোগাড় করে, খাবার পরিবেশন করে আশ্রয় দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেন তিনি।
তার সন্তানরা জানান, সরকারের পক্ষ থেকে বার বার স্বীকৃতি দিতে চাইলেও জীবনদশায় তিনি কোন ধরনের সহযোগিতা কিংবা স্বীকৃতি গ্রহন করেননি।
নগরীর ড. খাস্তগীর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ১৯৬৫ সালে এসএসসি এবং ১৯৬৭ সালে নাসিরাবাদ মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন মর্জিনা বেগম। সেই সময়েই তিনি আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত হন।
মরহুমার মৃত্যুতে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ মরহুমার আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে এই সাহসী মহিলা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন মর্জিনা বেগম। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়, চিকিৎসা, খাদ্য সহায়তায় অংশ নেন -১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তিনি তার বাড়ীতে অনেক তৎকালীন বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদী নেতাদের আশ্রয় দেন। চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ পরিবারের জন্য তিনি অনেক শ্রম ও ত্যাগ স্বীকার করেন।