নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী) আসনের আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমকে জুতা নিক্ষেপের ঘটনায় হত্যাচেষ্টার মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে মোরশেদ আলমের সমর্থক আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ১২ জনকে বিবাদী করে এ মামলা দায়ের করেন। একইদিন বিকেলে অভিযুক্ত আলা উদ্দিন আলোকে (৩০) মামলার প্রধান আসামি হিসেবে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মামলায় আলা উদ্দিন আলো ছাড়াও নোয়াখালী-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিকের ছোট ভাই ইঞ্জিনিয়ার আনিছুর রহমান ও সাবেক পৌর মেয়র আবু জাফর টিপুসহ তার সমর্থকদের আসামি করা হয়েছে।
সেনবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ আবু জাফর মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন মামলার প্রধান আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আসামিরা একে অপরের যোগসাজশে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী গত সোমবার বিকেল ৫টায় আসামি আলা উদ্দিন আলো ধারালো অস্ত্র নিয়ে পথসভার মঞ্চে হামলা করে। এতে এমপি মোরশেদ আলমসহ বাদী আনোয়ার হোসেন আহত হন।
এদিকে গত সোমবার সন্ধ্যায় ওই ঘটনার ২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। যাতে দেখা যায়, সভার সঞ্চালক এক জনের নাম ঘোষণা করে মাইক্রোফোন এগিয়ে দেওয়ার সময় হঠাৎ করে গ্যালারী থেকে উঠে এসে মঞ্চে বসা নৌকার প্রার্থী সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমকে জুতা দিয়ে পেটাতে যান। তখন তিনি হাত দিয়ে তা প্রতিহত করেন।
আটক আলা উদ্দিন আলো পুলিশকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে তার পরিবারের লোকজনের ওপর অন্যায়-অত্যাচার করে আসছেন এমপির ঘনিষ্ঠ লোকজন, বিষয়টি তিনি এমপিকে অভিযোগ দিয়েও ফলাফল পাননি। সেই ক্ষোভ থেকেই এমপিকে মঞ্চে জুতা নিয়ে পেটাতে যান।
আলা উদ্দিনের মা জানান, তার ছেলে বিদেশে থাকাকালীন সময়ে মানসিক সমস্যা দেখা দিলে সে দেশে চলে আসেন। এর আগেও সে আমার সাথে ও মসজিদের ইমাম সাহেবসহ অনেকের সাথে খারাপ আচরণ করে।
থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু জাফর বলেন, যেহেতু নির্বাচনকালীন সময় তাই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। যাতে কোনো পক্ষ অহেতুক হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে মামলার তদন্ত কাজ চালানো হবে।
অন্যদিকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে নৌকা মার্কা প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বী কাঁচি মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক বলেন, কে বা কারা, কেন এমপিকে আক্রমণ করেছেন জানি না। কিন্তু তিনি আমার ভাই, সাবেক মেয়রসহ অন্যান্য সমর্থককে আসামি করে মামলা দিয়েছেন। তিনি ভোটের লড়াইয়ে হেরে যাওয়ার আশংকায় মাঠে আমার লোকজনকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই এটি করছেন। আমি এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবী করে ন্যায়বিচার বিচার প্রত্যাশা করছি।
উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকেল ৫টার দিকে সেনবাগ উপজেলার কেশারপাড় ইউনিয়নের দমদমা বাজারে নৌকা প্রতীকের পথসভার মঞ্চে সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমকে জুতা নিক্ষেপ করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত আলাউদ্দিন আলোকে উপস্থিত নেতা-কর্মীরা গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।