নওগাঁয় পদত্যাগের দাবীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় এক অধ্যক্ষের জ্ঞান হারিয়ে ফেলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই অধ্যক্ষের নাম নুরুল ইসলাম। তিনি হাঁপানিয়া স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে হাঁপানিয়া স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল ইসলামের পদত্যাগের দাবি করে শিক্ষার্থীরা। ঘটনার দিন সকালে অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানে আসলে শিক্ষার্থীরা তাকে তার কক্ষে অবরুদ্ধে করে রাখেন। অবরুদ্ধ অবস্থায় বিকেল ৩টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। একপর্যায়ে চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নেয়া হয় নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে সুস্থতা অনুভব করলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয় পরিবার।
নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক কাকলী হক জানান, বিকেলের দিকে একজন শিক্ষককে হাসপাতালে নেয়া হয়। তখন তার প্রেসার হাই ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর উনি সুস্থতা অনুভব করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তার মিনি স্ট্রোক হতে পারে। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহীতে নিয়ে যান তার পরিবার।
নুরুল ইসলামের বড় ভাই আবু নাছের আহম্মেদ জানান, নুরুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে গত রোববার থেকে তার প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষার্থী ও বহিরাগত লোকজন আন্দোলন করছিল। এ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম রবীন শিষ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, শিক্ষক ও অধ্যক্ষকে নিয়ে সভা করেন এবং উভয়পক্ষের মধ্যে মিমাংসা করে দেন। এদিন সকালে নুরুল ইসলাম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেলে কিছু শিক্ষার্থী তাকে বিগত সময়ের কিছু হিসাব বুঝে দিতে বলেন। নুরুল ইসলাম তার হিসাব-নিকাশ বুঝে দেয়ার এক পর্যায়ে দুপুর ২টার দিকে বহিরাগত কিছু লোকজন তার কার্যালয়ে ঢুকে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও টানাহেঁচড়া করতে থাকে। এভাবে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাকে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে নুরুল ইসলাম সেখানে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা ও হাঁপানিয়া স্কুল এন্ড কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এস এম রবীন শিষ জানান, কয়েকদিন ধরেই হাঁপানিয়া স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষকে নিয়ে একটা অস্থিরতা চলছিল। বিষয়টি মঙ্গলবার উভয়পক্ষের সঙ্গে আমি সভাও করেছি। উভয়পক্ষের সমঝোতার মধ্য দিয়ে সভাটি শেষ হয়। কিন্তু আজকে আবারও ওই প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা দেখা দেয়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
তিনি আরও জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহে চলমান অস্থিরতা বন্ধ করতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে একটি সভা আহ্বান করেছি। যেখানে উপজেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।