সাবেক আওয়ামীলীগ সরকারের ৩টি অবৈধ ও প্রতারণামূলক জাতীয় নির্বাচনের আয়োজনের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নির্বাচন কমিশনের সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-৬ কাজী শরিফুল হকের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম। আদালত মামলা গ্রহণ করে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় সাবেক সিইসি কাজী রাকিবুদ্দিন আহমদ, কে এম নুরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ কমিশনার ও সচিবরা ছাড়াও আসামি করা হয়েছে আওয়মিী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ তিন মেয়াদে থাকা সংসদ সদস্যদের।
বাদীর আইনজীবী কফিল উদ্দিন বলেন, ‘গত তিন নির্বাচনে বিরোধীদলসহ অনেক জনপ্রিয় নেতার অংশগ্রহণ ছিল না। সাধারণ মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। যারা কমিশনে ছিলেন তাদের ব্যর্থতার কারণে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও নির্বাচনী মাঠে একপেশে আচরণ করেছে। বিপুল টাকা ব্যয়ে যে তিনটি নির্বাচন হয়েছে তাতে সংবিধানের খেলাপ করেছেন কমিশনারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এসব কারণে রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও প্রতারণা মামলা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একই সঙ্গে এসব নির্বাচনে সংসদ সদস্য যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারাও অবৈধভাবে সুযোগ সুবিধা ভোগ করায় তাদেরও এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।’
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের একপেশে, জনগণের অংশগ্রহণবিহীন ভুয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন ও সংবিধান রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের শপথ ভঙ্গ করে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের ভুয়া সংসদ সদস্য ঘোষণার ক্ষেত্রে আসামিদের সক্রিয় ভূমিকা ও অংশগ্রহণ ছিল। ভুয়া নির্বাচন আয়োজন ও অনির্বাচিত ব্যক্তিদের সংসদ সদস্য ঘোষণার কারণে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশন, জাতীয় সংসদসহ সমস্ত সাংবিধানিক কাঠামোর প্রতি মানুষের সমস্ত আস্থা, বিশ্বাস ও প্রত্যয় নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সংসদ সদস্যদের ব্যাঙ্গ করে ক্ষুদ্ধ জনগণ ২০১৪ সালের সংসদ সদস্যদের বিকাশ এমপি, ২০১৮ সালের সংসদ সদস্যদের নিশীরাতের এমপি, ও ২০২৪ সালের সংসদ সদস্যদের আমি-ডামির এমপি বলে হেয় করতো। আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে-পরিকল্পনায় বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকারসহ সব অধিকার হরণ করে তাদেরকে শোষণের ও লুন্ঠনের জন্য একের পর এক প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে অনির্বাচিত লোকদেরকে ভুয়া জাতীয় সংসদ সদস্য ঘোষনা করে সংসদ ও নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা, বিশ্বাস ও প্রত্যয় নষ্ট করে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।