রাঙামাটি পৌঁছেছেন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল। আজ শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টা ৫৬ মিনিটে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলটি রাঙামাটি পৌঁছায়।
এদিন সকাল সোয়া ১০টার দিকে দুই পার্বত্য জেলা রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি পরিদর্শন করতে তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারযোগে রাঙামাটির উদ্দেশে রওনা দেয় প্রতিনিধি দলটি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ছাড়াও দলে রয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ এবং প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আব্দুল হাফিজ।
রাঙামাটিতে সেখানকার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সাথে বৈঠক করবেন প্রতিনিধিরা। এরপর দুপুর ৩টা নাগাদ অন্তর্বর্তী সরকারের এই প্রতিনিধি দলটি খাগড়াছড়ি যাবে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি পরিদর্শনের একটি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এতে বলা হয়, ১৮ সেপ্টেম্বর জনৈক ব্যক্তিকে গণপিটুনি ও পরবর্তীতে তার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চলমান হামলা, আক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনায় সরকার গভীরভাবে দুঃখিত এবং ব্যথিত। সরকারের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সকল বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে এবং পার্বত্য তিন জেলায় বসবাসকারী সকল জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেখানে শান্তি, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি নিশ্চিতকরণে সরকার বদ্ধপরিকর।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়া এবং ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত না হওয়ার জন্য সকলকে নির্দেশ দেয়া যাচ্ছে। আইন নিজ হাতে তুলে নেয়া এবং যেকোনও সম্পত্তি ধ্বংস করা দণ্ডনীয় ও গর্হিত অপরাধ। সহিংসতার সকল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করা হবে। এ লক্ষ্যে একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি খুব শিগগির গঠন করা হবে। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে এতে বলা হয়।
প্রসঙ্গত, খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের জেরে গত বৃহস্পতিবার রাতভর জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। রাতে গোলাগুলি ও বিকেলের সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আর আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।
শুক্রবার সকালে এ ঘটনার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ করে পাহাড়ি ছাত্র-জনতা। এতে পাহাড়ি-বাঙালি সংর্ঘষে রূপ নেয়। বিক্ষোভ করার সময় দোকান, মসজিদ ও গাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠে।
পরে কনরুপা এলাকার ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া দেয়। এতে সংর্ঘষ বাধে। এ সময় শহরের বিভিন্নস্থানে দুই পক্ষের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেয়ার খবর পাওয়া যায়। এতে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়।
উল্লেখ্য, গত বুধবার খাগড়াছড়ি সদরের পানখাইয়াপাড়ায় চুরির অভিযোগে মামুন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার বিচারের দাবিতে দীঘিনালায় বিক্ষোভ চলাকালে সংঘর্ষের ঘটনার সূত্রপাত হয়। এ সময় দুর্বৃত্তরা ৮০টির মতো দোকান ও বসতবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর জেরে জেলার বিভিন্নস্থানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।