চট্টগ্রামের আনোয়ারায় এক বৃদ্ধকে উদ্দেশ্য করে ‘মুরুব্বি মুরুব্বি উঁহু উঁহু’ বলায় কিশোরীকে ঝলসে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে উপজেলার জুঁইদণ্ডী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়াইজারো বাড়িতে ওই ঘটনা ঘটে। তবে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে জানাজানি হয়।
আহত কিশোরীর নাম পপি আকতার (১৩)। সে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পপি আকতারের বাবা মফিজুর রহমান ৯ বছর আগে এবং মা বেবী আকতার সাত বছর আগে মারা গেছেন। ওই কিশোরী জুঁইদণ্ডী ইউনিয়নে অবস্থিত নানাবাড়িতে বসবাস করে আসছে।
জানা গেছে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর কিছু শিশু-কিশোরের সঙ্গে পপি নানাবাড়ির উঠানে খেলছিল। এ সময় এয়ার মোহাম্মদ নামের স্থানীয় এক বৃদ্ধকে দেখে খেলারত শিশু-কিশোরদের সবাই ‘মুরুব্বি মুরুব্বি উঁহু উঁহু’ করে দুষ্টুমি শুরু করে। এয়ার মোহাম্মদ এতে ক্ষিপ্ত হলেও শিশু-কিশোরদের কিছু না বলে ঘরে ঢুকে যান। কিছুক্ষণ পর এয়ার মোহাম্মদের ছোট ভাই মৃত আবুল কালামের স্ত্রী সায়েরা খাতুন গরম পানি নিয়ে উঠানে আসেন। একপর্যায়ে কিশোরী পপি আকতারের মাথায় গরম পানি ঢেলে দেন। এতে পপি আক্তার চিৎকার দিয়ে মাটিতে গড়াগড়ি শুরু করে। এলাকার লোকজন পপিকে প্রথমে বাড়ির পুকুরের পানিতে ভিজিয়ে আনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে শারীরিক অবস্থা শঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
আহত কিশোরী পপির মামা মো. দিদারুল আলম জানান, ‘বাবা-মা হারা কিশোরী পপি আকতার বাড়ির উঠানে বন্ধুদের সঙ্গে খেলছিল। এ সময় তার নানা সম্পর্কিত এয়ার মোহাম্মদ (৬০) নামের এক বৃদ্ধকে দুষ্টুমির বশে ‘মুরুব্বি, মুরুব্বি উঁহু’ বলে কিছুক্ষণপর এয়ার মোহাম্মদের ছোট ভাইয়ের বউ সায়েরা খাতুন (৫৫) এসে তার শরীরে গরম পানি ঢেলে দেয়। এতে তার শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। পরে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন।
এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি বলে জানিয়েছে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মনির হোসেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’