ইসরায়েলে হামলার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তেল আবিবে গতকাল সোমবার (৭ অক্টোবর) আবারও একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হামাস। এ হামলার মাধ্যমে হামাস তাদের সক্ষমতার জানান দিয়েছে যে, পুরো এক বছর গাজায় ইসরায়েল হামলা চালিয়ে তাদের মনোবল বিন্দুমাত্র টলাতে পারেনি।
এদিকে গতকাল হামাসের পাশাপাশি ইসরায়েলের তৃতীয় বৃহত্তম শহর হাইফাতে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ। হামলায় ১০ জন আহত হয়।
এ অবস্থার মধ্যে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সাবেক প্রধান জিওরা আইল্যান্ড বলেন, গাজা ও লেবাননে ইসরায়েল হামলা চালিয়ে পুরোপুরোভাবে জয়ী হতে পারবে না।
ইসরায়েলি চ্যানের ১২কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেন। জিওরা আইল্যান্ড বলেন, ইসরায়েলের কাছে হামাস ও হিজবুল্লাহ পরাজয়বরণ করবে না। বরং তারা ক্রমাগতভাবে হামলা চালিয়ে যাবে। এ অবস্থায় ইসরায়েল তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ব্যবহার করে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করতে পারবে না। তবে তাদের জন্য রাজনৈতিক দরজা উন্মুক্ত করতে হবে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাসের ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা। এতে ইসরায়েলে প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হয় এবং ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস।
এ হামলার প্রতিবাদে ওইদিনই গাজায় পাল্টা হামলার মধ্য দিয়ে গাজা যুদ্ধের সূচনা করে ইসরায়েল। এক বছর পূর্ণ হওয়া এই যুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় গাজার প্রায় ৪২ হাজার বাসিন্দা নিহত হয়েছেন আর ফিলিস্তিনি ছিটমহলটি প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
এক বছরের যুদ্ধে হামাস ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। তাদের শাসিত ভূখণ্ড গাজা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। তারপরও ফিলিস্তিনি এই গোষ্ঠীটি রূপকথার ‘ফিনিক্স পাখির’ মতো ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় জানিয়েছে।
এক বছর আগে হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে রকেট ও ড্রোন হামলা শুরু করার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ২০০০ লেবাননি নিহত হয়েছেন। এদের অধিকাংশেরই মৃত্যু হয়েছে গত কয়েক সপ্তাহে।
হামাস ও হিজবুল্লাহর প্রতি সমর্থন জানিয়ে আঞ্চলিক শক্তি ইরান ১ অক্টোবর ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইসরায়েল প্রতিশোধমূলক হামলা চালাবে এমনটি জানিয়ে তারা লক্ষ্যস্থলগুলো যাচাই করে দেখছে বলে জানিয়েছে। ইরানের তেল স্থাপনাগুলো সম্ভাব্য লক্ষ্যস্থল হতে পারে।
এভাবে দুই স্থানীয় শক্তির মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্য দিয়ে বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরু হলে তাতে সুপার পাওয়ার যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়তে পারে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।
সূত্র: আল জাজিরা