৯৩৮ কোটি টাকার প্রকল্পে ৭০৮ কোটিই অনিয়ম। এমন পুকুর চুরি হয়েছে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে। টেন্ডারের শর্ত পরিবর্তন, নিম্নমানের কেনাকাটা, জনবল নিয়োগ ও সভা-সেমিনার সবখাতেই হয়েছে দুর্নীতি। যার অভিযোগ জমা পড়েছে দুদকে, তদন্ত করছে তথ্য ও প্রযুক্তি অধিদপ্তরও।
নাটোরের হিজলী সোনাপুর হাইস্কুলের শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব। যেখানে কাজ করে না টেবিলে সাজিয়ে রাখা বেশিরভাগ ল্যাপটপ। বরাদ্দ থাকলেও দেয়া হয়নি ইউপিএস।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এখানে কম্পিটারের র্যামগুলো এতো স্লো যে, কাজই করা যায় না। এছাড়া অনেক সময় বিদ্যুৎ থাকে না।
সারাদেশের ৫ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রথম দফায় ৫ হাজার ল্যাব বসানো হয়। দ্বিতীয় দফায় আরও পাঁচ হাজার। কিন্তু বেশিরভাগ ল্যাবে নষ্ট ল্যাপটপ -কম্পিউটার।
দ্বিতীয় ধাপে ৯৩৮ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে সরকারি নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলছেন, ল্যাপটপ, যন্ত্রাংশ আর আসবাবপত্র কেনাকাটায় অনিয়ম করা হয়েছে ৭০৮ কোটি টাকার। অনিয়ম করা হয়েছে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের কার্যক্রমে। সভা সেমিনার আর রোবট অলিম্পিয়াডের নামেও করা হয়েছে অযৌক্তিক বিল। প্রকল্পের জনবল নিয়োগেও মানা হয়নি নিয়মকানুন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক ফজলুল করিম বলেন, এই খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা অপচয় হয়েছে। অথচ আইসিটি র্যাংকিং-এ আমাদের দেশ মালদ্বীপেরও নিচে।
তথ্য বলছে, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মোস্তফা কামাল। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়া হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়, টেন্ডারের শর্ত পরিবর্তন করে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, শুধুমাত্র একটি পরিবারের সদস্যদের নামে যখন কোনো প্রজেক্ট একনেকে যেতো তখন কোনো কিছু ছাড়াই অনুমোদন দেয়া হতো। যে পরিমান অর্থের প্রয়োজন হয়, তার চেয়ে বেশি রাখা হতো।
এসব অনিয়ম নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে দুদকে, তদন্ত করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগও।