পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বর্তমানে ১৮৮টি ফৌজদারি মামলা ও তদন্ত চলছে। শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) জমা দেয়া সরকারি নথি থেকে এই তথ্য থেকে জানা গেছে। খবর দ্য ডনের।
পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের বিরুদ্ধে ঠিক কতটি মামলা চলমান, তা জানতে আদালতে আবেদন করেছিলেন তার বোন নুরিন নিয়াজি। তারপর সরকারকে খানের বিরুদ্ধে সব মামলার বিস্তারিত তথ্য হাজির করতে বলেন আদালত। আদালতের আদেশের পরই এসব তথ্য জমা দেয় পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ইমরান খানের বিরুদ্ধে পাঞ্জাবে ৯৯টি, ইসলামাবাদে ৭৬টি এবং খাইবার পাখতুনখোয়ায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া তিনি ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এফআইএ) সাতটি তদন্ত এবং ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরোর (এনএবি) তিনটি মামলায় অভিযুক্ত। এর পাশাপাশি তোশাখানা মামলায় তার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিরুদ্ধে আপিল এখনো আদালতে মুলতবি রয়েছে। এসব মামলার বেশিরভাগই অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে পিটিআইয়ের প্রতিবাদের সময় দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে নিজের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান মামলা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ইমরান খান। শুক্রবার আদিয়ালা জেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, পিটিআইয়ের প্রতিটি বিক্ষোভের পরে সরকার তার বিরুদ্ধে নতুন নতুন মামলা দায়ের করে।
সামাজিক মাধ্যম এক্সে দেয়া এক পোস্টে তিনি জানান, সরকার গণতান্ত্রিক নীতি দুর্বল করতে এবং কর্তৃত্ববাদী শাসন চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। একজন ব্যক্তিকে ক্ষমতায় রাখার জন্য ২৬তম সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে বিচার বিভাগ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে বাধ্য করে দেশে ১০ বছরের একনায়কতান্ত্রিক শাসন চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া দুই দাবি পূরণ না হলে সারাদেশে অসহযোগ আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন ইমরান খান। একই সঙ্গে নিজ দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতাকর্মী ও সমর্থকদের আগামী সপ্তাহে সমাবেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। রাজধানী ইসলামাবাদে পিটিআইয়ের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও প্রাণহানির কয়েক দিন পরই এই বার্তা ইমরান খান।
গত ২৫ নভেম্বর ইসলামাবাদে পিটিআইয়ের সমাবেশে এবং গত বছরের ৯ মে দেশজুড়ে সহিংসতার ঘটনায় একটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ইমরান খান। ইমরানের মুক্তি দাবিতে গত মাসে ওই সহিংসতায় ১২ পিটিআই সমর্থক নিহত হন। গত বছরের ওই সহিংসতায় নিহত হন ৯ জন। ইমরান খান বলেছেন, এসব ঘটনায় গ্রেপ্তার রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
ইমরান জানান, এ দুই দাবি যদি পূরণ না হয় তাহলে ১৪ ডিসেম্বর থেকে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হবে। আর এর যেকোনো পরিণতির জন্য দায়ী থাকবে সরকার।
তবে পাক সরকারের দাবি, গত ২৫ নভেম্বর পিটিআইয়ের বিক্ষোভের প্রাণহানির কোনো ঘটনা ঘটেনি। আর গত বছরের ৯ মে ইমরান খানের সমর্থকেরা সেনা স্থাপনায় হামলা করেছেন।