দেশে কঠোর আইন থাকলেও নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা কমছেই না এবং সাংবাদিকদের বাক স্বাধীনতার উপর জোর দিয়েছেন সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য উচ্চ আদালতে জনস্বার্থে রিট করার ক্ষেত্রে আইনজীবীদের আরো সতর্ক হওয়ার তাগিদ দেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মোঃ মুজিবর রহমান মিয়া
শনিবার সকালে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস্ ফাউন্ডেশন- বিএইচআরএফ এর ১৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও ৪র্থ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন । অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি এটর্নি জেনারেল মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন-আজকে গণতন্ত্রের স্বাদ এনে দেওয়া জুলাই অভ্যুথানের শহিদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন । যেখানে খুন হয়, মিথ্যা মামলা হয়, সাংবাদিকদের কণ্ঠ রোধ করা সে দেশে মানবাধিকার রক্ষা করা অনেক কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ। মৌলিক অধিকার ও ভোটাধিকার এক নয়। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ভোটাধিকার সাংবিধানিক অধিকার আমরা কি প্রজা মানসিকতার নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই ? বিগত সরকার গণতন্ত্রের নামে খেলা করেছেন ধীরে ধীরে প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণপ্রজাতন্ত্রী নয়, গণতান্ত্রিক করার জন্য লড়াই চলছে ।দেশের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে ঢাকা বুদ্ধিজীবি শহীদ মিনারের পিছনে জুলাই বিপ্লবের শহিদদের গুম করে রাখা গণকবরের উল্লেখ করে এটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জজামান আবেগ আপ্লুত হয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন ।একুশে পদক প্রাপ্ত দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী শব্দটি জনগণকে প্রজা হিসেবে দেখছে । তা পরিবর্তন করা দরকার। মানবাধিকার সম্পর্কে আরো ব্যাপক জনমত গড়ে তুলতে হবে। বিভিন্ন দেশ যে মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে তাদের পাশে আমাদেরকে থাকতে হবে। প্রতিটি মানুষকে নিজ অধিকার ও অন্যের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। বিশেষ অতিথি বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, হাত পা থাকলে মানুষ হয় না, মানুষ হতে হলে বিবেক থাকতে হব, থাকতে হবে শুদ্ধাচার।
অনুষ্ঠানে সভার সভাপতি বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস্ ফাউন্ডেশন – এর প্রধান উপদেষ্টা আলহাজ্ব সূফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, সততা না থাকলে সব ক্ষেত্রে হতাশা ছড়িয়ে পড়বে।
বিএইচআরএফ চেয়ারপার সঞ্চালনায় নিজ বক্তব্যে এডভোকেট এলিনা খান বলেন, প্রত্যেকে আমরা দায়িত্বের প্রতি পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের প্রতি সৎ ও সচেতন থাকতে হবে, সংগঠনের প্রতিটি নেতা কর্মীকে আরো উদ্যোগী হতে হবে । আত্ম মানবতার সেবায় কাজ করার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা করে যেতে হবে । যেখানেই মানবাধিকার লংঘন সেখানেই এর বিরুদ্ধে আমাদেরকে সোচ্চার হতে হবে ।
সংগঠনের মহাসচিব এ এম জিয়া হাবীব বলেন, ভবিষ্যতে যারা মানবাধিকার কর্মকান্ডে অবদান রাখবে তাদেরকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা হবে । তিনি স্লাইড শোর মাধ্যমে সবার সামনে বাংলাদেশ ও বিশ্বে আলোচিত ঘটনাগুলির ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করেন ।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম জেলা বার এসোসিয়েশন এর সভাপতি, মো. নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জিপি মো. আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক, এডভোকেট, মহানগর পিপি এডভোকেট মফিজুল হক ভুঁইয়া,, সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ নুরুল করিম ।সাংবাদিকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট সাংবাদিক ওসমান গনি মনসুর ও সাংবাদিক মোঃ শাহ নওয়াজ, অনুষ্ঠানে বেলুন ও কবুতর উঠিয়ে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে প্রধান অতিথি অনুষ্ঠানের শুভ উদ্ভোধন করেন । উত্তরা শাখাকে সংগঠনের শ্রেষ্ট শাখা বির্বাচিত হয় ।আইন পেশায় ৫১ বছর পুর্তিতে বিজ্ঞ এড. এ.কে.এম মোহসেন উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীকে সম্মাননা প্রদান করা হয় এবং বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কার্যক্রমের যারা জীবন বাজি রেখে কাজ করেছেন তাদেরকে যথাক্রমে এড. সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার, এড. এএইচএম জসিম উদ্দিন, এড. আবুল খায়ের, এড. জান্নাতুল নাইম রুমানা, এড. পরেশ চন্দ্র দাস, এড. মোঃ সাইফুদ্দিন খালেদ, এড. মোঃ হাসান আলী, এড. রুমানা ইয়াসমিন সোমা, এড. গোলাম মাওলা মুরাদ, এড. এইচ এস সোহরাওয়ার্দী, এড. মোহাম্মদ বদরুল হাসান, এড. খুশনুদ রাইসা উশিকা, এড. কে.এম. শান্তনু চৌধুরী, এড. মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন (আরমান), এড. টুম্পা আইচ, মোবারেক আহমেদ, হাসান আল বান্না, এড. আংশু আসিফ পিয়াল, আবুল মোবারক, এড. ফাতিমা জাহরা আহসান রাইসা, আহসান হাবিব (বাবু), মোঃ আশরাফুল হক জীবন, মাহমুদুর রহমান শাওন, নজরুল হোসেন (শুকরিয়া), এরশাদ আলম ও মোঃ রাজীব হোসেন রিফাত – কে সম্মাননা সার্টিফিকেট দিয়ে তাদের কর্মকে মূল্যায়ন করা হয় । উক্ত অনুষ্ঠানে অতিথি আলোচক হিসাবে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, রাঙামাটি পার্বত্য চট্টগ্রামের সভাপতি এ কে এম মকসুদ আহমেদ, পুলিশ কমিশনার জি এম মাজহারুল ইসলাম, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির ভিসি নাজিম উদ্দিন, ডাঃ শফিউল আলম, জেলা ও দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস, বিজেএমই’র মাহবুবুর রহমান, ডিজি রেজাউল করিম, এড. সুলতানা আক্তার রুমি, বিভাগীয় পরিচালক (সমাজকল্যাণ) কাজী নজিবুর রহমান ও সাংবাদিক শাহ নেওয়াজ। এছাড়াও সুশীল সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ।