শৈল্পিক, একটি নাম। যার তুলনা শৈল্পিক নিজেই। শৈল্পিক চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের ফ্যাশন জগতে নতুন এক ধারা তৈরি করতে পেরেছে।
শৈল্পিকের কর্ণধার এইচ এম ইলিয়াছ। তাঁর পরিবারের ইচ্ছে ছিল তিনি পারিবারিক ব্যবসায় মনোযোগী হবেন। এই উদ্যোমী তরুণ সেই পথে না হেঁটে উচ্চ মাধ্যমিক শেষে ভর্তি হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায়। একটা সময় চারুকলায় পড়াশোনা করাটাও এই সমাজ ভালো চোখে দেখতো না! নানা রকম বাধা-বিপত্তি পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ঢলু নদীর বাঁকে বাঁকে দূরন্তপনায় মেতে থাকা সেই ইলিয়াছ আজ বাংলাদেশের ফ্যাশন জগতে নিজের জন্য একটা সম্মানের স্থান দখল করেছেন। হাটি হাটি পা পা করে শৈল্পিক এগিয়ে গেছে বহুদুর। সারাদেশ জুড়ে রয়েছে শৈল্পিকের ১৬টি শাখা।
পোষাকের জগতের আলোচিত ব্যক্তি এইচ এম ইলিয়াছের কথোপকথন তুলে ধরা হলো পাঠক নিউজের পাঠকদের উদ্দেশ্যে-
পাঠক নিউজ: কখন থেকে এই পেশায়?
ইলিয়াছ: সিটি কলেজে পড়াশুনা করার সময় মূলত কাজ শুরু করি। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলায় ভর্তি হয়ে বিভিন্ন প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করি। ২০০২ সালে ‘ঢঙ’ নামে প্রদর্শনী। ২০০৪ সাল থেকে শো’রুম নিয়ে শৈল্পিকের যাত্রা শুরু।
পাঠক.নিউজ: এই পথ চলায় অর্জন কী?
ইলিয়াছ: অর্জনতো অনেক। ক্লোজআপ-ওয়ান ফ্যাশন প্রতিযোগিতায় টপ টেনে থেকে ৫ম স্থান অর্জন করেছিলাম ২০০৩ সালে। সমকালের প্রতিযোগিতায় ২ বার প্রথম হই। পেয়েছি আনন্দভূবন, অন্যদিন পুরস্কার। এছাড়াও প্রথম আলোর আলোকিত ঈদ ফ্যাশন প্রতিযোগিতা ২০০৮, ২০০৯, ২০১০ এর হ্যাট্রিক চ্যাম্পিয়ন আপনাদের প্রিয় শৈল্পিক।
পাঠক.নিউজ: আপনার কাজের চ্যালেঞ্জ কী?
ইলিয়াছ: আমার কাজের চ্যালেঞ্জতো অনেক আছে। তবে ডিজাইন নকল/চুরিটা নৈতিকভাবে একটু কষ্ট পাই। আমরা এত কষ্টকরে ডিজাইন করি, দেখা গেলো সেটা হর-হামেশা নকল হচ্ছে।
পাঠক.নিউজ: নকল প্রতিরোধে কোন পদক্ষেপ?
ইলিয়াছ: আইন আছে, প্রয়োগেও আছে অনেক বাধা-বিপত্তি।
পাঠক.নিউজ: বিদেশী কাপড়ের ভীড়ে আপানাদের অবস্থা কী?
ইলিয়াছ: বিদেশী কাপড় সমস্যা না। সমস্যা হলো আমাদের বাজারটা আমাদের তৈরী কাপড় ধরে রাখার উপযুক্ত হয়ে উঠেনি। বাংলাদেশে বিশ্বের টপ ক্লাস কাপড় তৈরী হয়। সেটা আমাদের জন্য না। সেগুলো রপ্তানি হয়ে বিদেশ চলে যায়। সেখানে থেকে আমাদের আমদানীকারকরা ইম্পোর্ট করে। ইম্পোর্টার থেকে আমরা চড়া দামে কিনে নিই। এতে ফেব্রিকের দাম কয়েকগুণে বাড়ে। ফলে আমাদের প্রোডাক্টের দামও বেড়ে যায়।
পাঠক.নিউজ: আপনার কাজে অন্যান্য রঙতো থাকেই তবে সাদা-কালো-এস’র প্রাধান্য বেশী থাকে, কেন?
ইলিয়াছ: সাদা-কালো-এস হলো ইনিভার্সাল। মানুষের বেসিক পছন্দের কালার। ছোট-বড় সবাই এই কালারগুলো পছন্দ করে। তাই আমিও এই রঙকে প্রাধান্য দিই।
পাঠক.নিউজ: আপনার কাজের জনপ্রিয়তার রহস্য কী বলে আপনি মনে করেন?
ইলিয়াছ: আমার কাজে আমি সমসাময়িক চাহিদাটাকে প্রাধান্য দিই। মানুষ যা চায় আমি তা দেয়ার চেষ্টা করি। এটাই আমার কাজের বৈশিষ্ট্য বলতে পারেন, বলতে পারেন রহস্যও।
পাঠক.নিউজ: ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?
ইলিয়াছ: স্বপ্নতো অনেক বড়। আপনাদের প্রিয় এই প্রতিষ্ঠানকে দেশের প্রধান প্রতিষ্ঠানে রূপ দেয়াই আমার স্বপ্ন।
পাঠক.নিউজ: আপনাকে ধন্যবাদ।
ইলিয়াছ: আপনাদেরও ধন্যবাদ। পাঠক.নিউজের মাধ্যমে ফ্যাশন সচেতন সবাইকে ধন্যবাদ।