ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রফিকুল আমিন ও ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনের জামিন ১১ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের আপিল বেঞ্চ রবিবার (৩১ জুলাই) এ আদেশ দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। রফিকুল আমিনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমলুল হোসেন কিউসি।
খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের জানান, ১১ আগস্টের মধ্যে দুদককে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেছেন আদালত।
অর্থপাচারের অভিযোগে দুদকের দুই মামলায় নিম্ন আদালতে পাসপোর্ট জমা রাখার শর্তে ২০ জুলাই বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীস্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসেনকে জামিন দেন। পরে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে ২৪ জুলাই আপিল বিভাগে আবেদন করে দুদক।
ওইদিনই চেম্বার বিচারপতি আবেদনটি শুনানির জন্য ৩১ জুলাই দিন ধার্য করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছেন চেম্বার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। সেই প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ২০১২ সালের ৩১ জুলাই দুদকের উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার ও সহকারী পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম মামলা দুটি দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ডেসটিনি ট্রি-প্ল্যান্টেশন লিমিটেড কর্তৃপক্ষ এমএলএম পদ্ধতিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করে অত্যাধিক হারে সম্মানী, বেতনভাতা, ডিভিডেন্ট, কমিশন, প্রমোশনাল খরচ দেখিয়ে নিজেদের হিসাবে ২ হাজার ১০৬ কোটি ৬৪ লাখ ৬৫ হাজার পাঁচশ টাকা স্থানান্তর বা রূপান্তর করেন।
এ ছাড়া ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ এমএলএম পদ্ধতিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করে তাদের মালিকানাধীন বিভিন্ন কোম্পানিতে স্থানান্তর করে।
২০১২ সালের ২ অক্টোবর আদালতের নির্দেশে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি, ডেসটিনি ট্রি-প্ল্যান্টেশন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ৫৩৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়। এ মামলায় একই বছর ২৫ অক্টোবর রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং ২৭ নভেম্বর দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ডেসটিনির সব প্রতিষ্ঠানের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেয় আদালত।
২০১২ সালের ৬ আগস্ট আসামিরা ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে জামিন পেয়েছিলেন। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে আসামিদের জামিন বাতিল চেয়ে মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করে। এই মামলায় ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালত ডেসটিনির দুই শীর্ষ কর্মকর্তার জামিন নামঞ্জুর করেন। সেই দুই মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগ।