
ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের মেয়ে শাজনীন হত্যা মামলার আপিলের রায়ে ১ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনকে খালাস দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম শহীদুল ইসলাম শহিদ। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন সৈয়দ সাজ্জাত মইনুদ্দিন হাসান,হাসানের সহকারী বাদল, গৃহপরিচারিকা এস্তেমা খাতুন (মিনু) ও পারভীন।
মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে ৫ সদস্যের আপিল বেঞ্চ সকাল ৯টা ১০ মিনিটে এ রায় ঘোষণা করেন।
একই ঘটনায় তাজনীনের বাবা লতিফুর রহমানের করা অপর এক হত্যা মামলার কার্যক্রম চলবে না বলে আদেশ দেন আদালত।
আগে ১০ মে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ফাঁসির আদেশ পাওয়া ৫ আসামির আপিলের শুনানি শেষ হয়। সেদিনই মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রায় দেড় যুগ আগের আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের আপিলের চূড়ান্ত রায় হলো মঙ্গলবার।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে গুলশানে নিজ বাড়িতে খুন হন লতিফুর রহমানের মেয়ে স্কলাস্টিকা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী শাজনীন তাসনিম রহমান। এ ঘটনায় শাজনীনের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়।
চার বছর পর ২০০৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কাজী রহমতউল্লাহ শাজনীনকে ধর্ষণ ও খুনের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতার দায়ে তাদের বাড়ির সংস্কারকাজের দায়িত্ব পালনকারী ঠিকাদার সৈয়দ সাজ্জাদ মইনুদ্দিন হাসানসহ ছয়জনকে ফাঁসির আদেশ দেন।
ফাঁসির আদেশ পাওয়া বাকি পাঁচ আসামি হলেন- গৃহভৃত্য শহীদুল ইসলাম (শহীদ), হাসানের সহকারী বাদল এবং গৃহপরিচারিকা দুই বোন এস্তেমা খাতুন (মিনু), পারভীন ও কাঠমিস্ত্রি শনিরাম মণ্ডল।
পরে এই মামলার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য হাইকোর্টে যায়। ২০০৬ সালের ১০ জুলাই হাইকোর্ট পাঁচ আসামি হাসান, শহীদ, বাদল, মিনু ও পারভীনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন। তবে ফাঁসির আদেশ পাওয়া শনিরামকে খালাস দেন হাইকোর্ট।
এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করেন ফাঁসির আদেশ পাওয়া চার আসামি মইনুদ্দিন হাসান, বাদল, মিনু ও পারভীন। ২০০৯ সালের ২৬ এপ্রিল সাজাপ্রাপ্ত চার আসামির আপিলের আবেদন মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। ফাঁসির আদেশ পাওয়া আরেক আসামি শহীদুল জেল আপিল করেন।
প্রায় সাত বছর পর ২৯ মার্চ ওই পাঁচ আসামির আপিলের শুনানি শুরু হয়। সেই আপিলের শুনানি শেষে ১০ মে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন আদালত।