খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:
সংশোধিত ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশন আইন বাতিলের দাবীতে খাগড়াছড়িতে পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের ডাকে বুধবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে। দোকানপাট যানবাহন দিনভর বন্ধ ছিল। হরতালের সমর্থনে কোথাও পিকেটিং চোখে পড়েনি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল জোরদার করা হয়।
এদিকে হরতাল শেষে ফের আগামীকাল বৃহস্পতিবার হরতালের ডাকা দিয়েছে পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো: মজিদ আলী জানান, জেলার কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন সজাগ ছিল।
উল্লেখ,গত ১ লা আগষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ভেটিং সাপেক্ষে ‘পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০১৬’ এর খসড়ার নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। এর ফলে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যানের একক ক্ষমতা খর্ব করা হয়।
১৯৯৭ সালে সম্পাদিক পার্বত্য চুক্তির আলোকে গঠিত পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশন আইন-২০০১। একজন অবসর প্রাপ্ত বিচারপতি কমিশনের চেয়ারম্যান,তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান,তিন সার্কেল চিফ, আঞ্চলিক পরিষদ চেয়াম্যানের প্রতিনিধি ও বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিনিধি নিয়ে ৯ সদস্যের এ পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশন। বিদ্যমান আইনে চেয়ারম্যানসহ ৩ জন হলে কোরাম হতো এবং চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত বলে বিবেচিত হতো। কিন্তু সংশোধিত আইনে চেয়ারম্যানসহ ৪ সদস্য উপস্থিত হলেই কোরাম হবে এবং কমিশনের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান সন্তু লারমা শুরু থেকে এ আইনের বিরোধিতা করে আসছিলেন। বিশেষ কওে কোরাম ও চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার নিয়ে। একটি সূত্র জানায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের পাঠানো ২৩টি সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়। এর মধ্যে ১৪টি সংশোধনী অনুমোদন দেওয়া হয়। এছড়াও আইনের সংশোধনীতে কিছু নতুন ধারা সংযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে,পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশনের দপ্তওে সচিব বা অন্যান্য পদে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অগ্রাধিকার দিতে হবে।সে ক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দারা অগ্রাধিকার পাবেন। আইনের আওতায় কমিশনের প্রধান কার্যালয় খাগড়াছড়ি থাকলেও যে কোন স্থানে শাখা অফিস করা যাবে।
পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিস্পত্তি কমিশন সংশোধনী অনুমোদনের পর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালি সংগঠনগুলো বিক্ষোভ ও মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচী পালন করে আসছে।