বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে শ্রমিকলীগ ব্যানার রেলের ইজারাকৃত জায়গা দখল করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২০ আগস্ট) সকালে উপজেলা সদরের তুলাতলে এ জায়গা দখলে নেয় তারা।
এ সময় প্রবাসী মো. আলমগীর ও তার ভাই শফিউল আলম ছোটনকে ছুরিকাঘাতসহ এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর জখম করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ একটি ছোরা উদ্ধার করেছে। আহতরা পূর্ব গোমদন্ডী মুফতিপাড়া আবুল খায়ের সওদাগরের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বোয়ালখালী থানার উপ-পরিদর্শ পীযুষ চন্দ্র সিংহ জানান, আহত মো. আলমগীরকে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানের দুবৃর্ত্তরা হামলে পরে। খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে দুর্বৃত্তদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। সেখান থেকে পুলিশ ছোরাটি উদ্ধার করে।
মো. আলমগীরের অবস্থায় আশঙ্কাজনক হওয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মো. বাবর। তিনি জানান, এঘটনায় সন্ত্রাসী হামলায় আহত আলমগীরের ছোট ভাই শফিউল আলম ও মিশু (১৯) নামের এক মহিলা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। মো. আলমগীর বর্তমানে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসীন রয়েছেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বোয়ালখালীর ১০নং লটের ৬শতক ভূমির ইজারাদার উপজেলার পূর্ব গোমদন্ডী ইউনিয়নের আবুল খায়েরের ছেলে প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম। তাঁর দুই ভ্রাতা আলমগীর ও ছোটন জায়গাটি দেখভাল করে আসছেন। এ ভূমিতে তাঁরা অস্থায়ীভাবে জান্নাতুর ফেরদৌস নামের এক মহিলাকে পরিবার নিয়ে বসবাস করার সুযোগ করে দেন।
অভিযোগ রয়েছে জান্নাতুর ফেরদৌস এ জায়গা দখল নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। গত দুইদিন যাবৎ ইজারাদারের লোকজন ঘেরাবেড়া দিয়ে ওই জায়গা রক্ষণাবেক্ষণ করার কাজ চলাকালে জান্নাতুর ফেরদৌসের সহযোগিতায় জাতীয় শ্রমিকলীগের ব্যানারে কতিপয় দুর্বৃত্ত চড়াও হয়। তারা জোরপূর্বক ব্যানার টাঙাতে গেলে শুরু হয় সংঘাত। এসময় দুবৃর্ত্তদের মারধরে মো. আলমগীর ও ছোটন আহত হন। আলমগীরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতে চিহ্ন রয়েছে।
এ অবস্থায় রেলে জায়গা জাতীয় শ্রমিকলীগের কার্যালয় লেখা শ্রমিকলীগের একটি ব্যানার ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া আহত আলমগীরসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামীয় ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে জান্নাতুর ফেরদৌস নামের এক মহিলা।
এ ব্যাপারে উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান খোকা বলেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। এধরণের ঘৃণ্য কাজ তিনি বা তাঁর দল সমর্থন করেন না। যদি কেউ এ ধরণের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান । এছাড়া বিষয়টি দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
আহতদের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী জানান, বোয়ালখালী থানার পাশে তুলাতল এলাকায় কেনা জায়গায় ঘর নির্মাণ করার আগে থেকেই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা না পেয়ে শনিবার সকালে শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করতে গেলে অতর্কিতভাবে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।
শাকপুরা গ্রামের বাসিন্দা সন্ত্রাসী গিয়াস উদ্দিন ও কামালের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন সন্ত্রাসী এ হামলা চালায় অভিযোগ করে তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা আমার ভাইকে মাথায়, বুকে ও হাতে কুপিয়ে জখম করে। হামলার খবর পেয়ে আমার ছোট ভাই শফিউল আলম ঘটনাস্থলে গেলে তার উপরও হামলা চালানো হয়।
এদিকে হামলার শিকার আলমগীরের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ হামলার ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হলেও তারা কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়নি। অন্যদিকে পুলিশ বলছে তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না।
তবে বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.সালাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, হামলার বিষয়ে আমাদের কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।