প্রতিদিন সকাল বেলা চা না খেলে চাঙ্গা হওয়া যায় না। এতে চিনি, দুধ, ক্রিম দেয়া চা প্রতিদিন খেয়ে খেয়ে মোটাও হয়ে যাচ্ছেন।
তাছাড়া সকালে এতো তাড়াহুড়ার মধ্যে এতো সময় নিয়ে চা তৈরিও তো ঝামেলা তাই না? এতো ঝামেলা এড়াতে সকালে চায়ের বদলে একটি আপেল খেয়ে নিন। তাহলে সারা দিন কাটবে তরতাজা।
ক্যাফেইন:
আপনি যখন ঘুমিয়ে থাকেন তখন শরীরের তাপমাত্রা এবং রক্তচাপ কমে যায়। এই অবস্থা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে বেশ খানিকটা সময় লাগে। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠার পড়ে বেশ কিছুক্ষন আলসেমি লাগে।
এক কাপ গরম চা শরীরকে চাঙ্গা করে দেয়। এক কাপ চায়ের ১০০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দেয় এবং রক্ত চাপ কিছুটা বাড়িয়ে তরতাজা অনুভব করতে সহায়তা করে।
আপেলে কোনো ক্যাফেইন নেই। কিন্তু আপেলে আছে ফ্রুকটোজ নামের একধরনের চিনি যা আরো কিছু ফল এবং মধুতে পাওয়া যায়। এছাড়াও আপেলের উপরের লাল আবরণে আছে প্রচুর ফাইবার।
আপেল খেলে চা- কফি পানের মত সাথে সাথে সতেজ লাগে না। কিন্তু আপেল খাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ধীরে ধীরে শরীর সতেজ লাগতে শুরু করে এবং এর প্রভাব সারাদিন থাকে। অর্থাৎ সকালে উঠে একটি আপেল খেলে সারাদিন কর্মক্ষমতা থাকবে এবং প্রচুর শক্তি পাওয়া যাবে।
কার্বোহাইড্রেট:
চায়ে কোনো ক্যালরিক এনার্জি নেই। ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে এক কাপ চা খেলে কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার রক্তের থেকে সুগার কমে যাবে একেবারে।
আপেলে এনার্জি বর্ধক ক্যাফেইন না থাকলেও একটি বড় আকৃতির আপেলে ১১৬ ক্যালরী থাকে। আপেলে উপস্থিত ১৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে প্রায় ১০ গ্রাম সুগারে দ্রুত কর্মক্ষম সুক্রোজ ও গ্লুকোজ থাকে।
আপেলের বাকি কার্বোহাইড্রেট হলো ফ্রুকটোজ যা হজম হতে বেশ খানিকটা সময় নেয়। ফলে এটা চায়ের চাইতে বেশি সময় ধরে শরীরের শক্তি যোগায়।
দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব:
চা এবং আপেল দুটোতেই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে যা স্বাস্থ্যের উপর দীর্ঘ মেয়াদী ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
দীর্ঘ দিন ধরে চা খাওয়ার অভ্যাস করলে অনেকের চায়ের নেশা হয়ে যায়। ফলে একদিন সকালে চা না খেলে শরীর চাঙ্গা লাগে না এবং মাথা ব্যাথা করে। নিয়মিত আপেল খেলে এধরণের কোনো নেশা হয় না। ফলে চায়ের বদলে আপেল খাওয়ার অভ্যাস করাটাই সুবিধাজনক।
চায়ের বদলে আপেলের খাওয়ার উপকারিতা:
আপেলে প্রচুর পরিমাণে ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে। সকালে নিয়মিত আপেল খেলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দূর হয়। সপ্তাহে অন্তত ২টি বা তার বেশি আপেল খেলে হাঁপানির সমস্যা কমে।
২০০৪ সালে নিউট্রিশন জার্নালে প্রকাশিত একটি আর্টিকেলে বলা হয়েছে যে সপ্তাহে ৫ টা বার তার বেশি আপেল খেলে ফুসফুস ১৩৮ মিলিলিটার বেশি বাতাস ধারণ করতে পারে। যা অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি।
সুস্থ থাকতে হলে সকালে চায়ের কাপের বদলে একটি আপেল তুলে নিন। আর যদি চা একেবারেই ছাড়তে না পারেন তাহলে চা খাওয়ার পাশাপাশি একটি আপেল খান প্রতিদিন। সকালে তরতাজা হওয়ার পাশাপাশি সারাদিন কর্ম উদ্দিপনা জাগাবে একটি মাত্র আপেল।