রাতের আধাঁরে স্কেবেটর দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে মিরসরাই উপজেলা বিএনপির কার্যালয় । সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে মিরসরাই পৌর কর্তৃপক্ষ ভবনটি গুড়িয়ে দেয় বলে উপজেলা বিএনপির অভিযোগ। তবে পৌর মেয়র গিয়াস উদ্দিন বলছেন, পৌরসভার জায়গার উপর নির্মিত ভবনটি ভাঙ্গার জন্য সাবেক মেয়র এম শাহজাহান ঠিকাদার নিয়োগ করেছিলেন। ওই ঠিকাদার সোমবার রাতে কার্যালয়টি ভেঙ্গে ফেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত দেড়টার দিকে প্রায় অর্ধ শতাধিক ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে একটি স্কেবেটর দিয়ে উপজেলা বিএনপির দ্বিতলা ভবনটি ভাঙ্গার কাজ শুরু করে। এক ঘন্টার মধ্যে ভবনটি গুড়িয়ে দেয়া হয়। উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সালাহ উদ্দিন সেলিম জানান, মিরসরাই ইউনিয়ন পরিষদের ওই জায়গায় ১৯৮০ সাল থেকে বিএনপির কার্যালয় ছিল। ২০০১ সালে মিরসরাই ইউনিয়ন পরিষদের সাথে প্রতি মাসে ৫শ টাকা ভাড়া চুক্তি করে ওই জায়গায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে দ্বিতলা ভবন করা হয়। এরপর মিরসরাইকে পৌরসভা ঘোষনা করা হলে পৌরসভা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জায়গাটি কিনে নেয়। এখন পৌরসভা আমাদেরকে কোন নোটিশ, ভবনের ক্ষতিপূরন না দিয়ে রাজনীতিক প্রতিহিংসার কারণে প্রায় তিন যুগের ভবনটি ভেঙ্গে ফেলেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি নিয়ে আইনগত ভাবে মোকাবেলা করব।
মিরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে রাতের আঁধারে আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা জোর পূর্বক বিএনপির কার্যালয় গুড়িয়ে দিয়েছে যা অত্যান্ত ঘৃণিত ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা।
এদিকে রাতের আঁধারে বিএনপির কার্যালয় গুড়িয়ে দেয়ায় পৃথক পৃথকভাবে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক নুরুল আমিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল আউয়াল চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী, সদস্য সচিব সালাহ উদ্দিন সেলিম, বিএনপি নেতা আলা উদ্দিন। উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ আলমগীর, গাজী নিজাম উদ্দিন, বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক দিদারুল আলম মিয়াজী।
এছাড়া প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানান উপজেলা বিএনপির আহবায়ক (একাংশ) ও সাবেক সভাপতি এম আলা উদ্দিন ও যুগ্ম আহবায়ক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সহ উপজেলা যুবদল, ছাত্রদল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এ বিষয়ে মিরসরাই পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাখের ইসলাম রাজু বলেন, বিএনপির কার্যালয় ভেঙ্গে ফেলার বিষয়টি ব্যাক্তিগতভাবে আমি অবহিত ছিলাম না। মেয়র এ ব্যাপারে আমার সাথে কোন আলোচনা করেনি। তবে কাউন্সিলরদের সাথে আলোচনা হয়েছে কি-না বলতে পারবো না।
এ বিষয়ে মিরসরাই পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র গিয়াস উদ্দিন বলেন, ২০১১ সালে মিরসরাই সদর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মিরসরাই পৌরসভা স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তিসহ ৩৮ শতক জায়গা ৯৪ লাখ টাকা দিয়ে কিনে নেয়া হয়। ওই সময় ইউনিয়ন পরিষদকে বিএনপির ভবনটির জন্য ৯ লাখ টাকা মূল্য পরিশোধ করে পৌরসভা। এরপর উপজেলা বিএনপিকে তাদের কার্যালয় সরিয়ে নিতে জেলা প্রশাসকের মাধম্যে নোটিশ দেয়া হয়। তারা কার্যালয় সরিয়ে না নেয়ায় সাবেক পৌর মেয়র ওই কার্যালয় ভাঙ্গার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করে। এখন ওই ঠিকাদার তাদের কাজ করেছে। দিনে না ভেঙ্গে রাতে কেন ভাঙ্গা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঠিকাদার তাদের কাজ দিনে করবে না রাতে করবে সেটা ওই ঠিকাদারের বিষয়।