রাত পোহালেই চট্টগ্রাম চিড়িয়া খানায় বাজবে বিয়ের সানাই। বুধবার সকাল ১১ টায় বিয়ের পিঁড়িতে বসবে “কনে” সিংহি নোভা আর “বর” সিংহ বাদশা।
চট্টগ্রামের কনে নোভার জন্য রংপুর থেকে নিয়ে আসা হয়েছে বাদশাকে। বিয়ের সব আয়োজন ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
নোভা আর বাদশা’র বিয়েতে আমন্ত্রিত তিনশতাধিক বরযাত্রীর মধ্যে সাংবাদিকই থাকবেন আড়াইশ। এ ছাড়া চিড়িয়াখানার পৃষ্ঠপোষক, পরিচালনা কমিটির সদস্য, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও অংশ নেবেন বিয়েতে।
এছাড়া বিয়ে দেখতে আসবে উৎসুক অনেক দর্শক। আগামীকাল বুধবার বিয়ে হলেও আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে শত শত নারী পুরষের আনাগোনা। সবাই আসছে বর কনেকে দেখতে। সন্ধ্যার পর হবে মেহেদী অনুষ্ঠান। সবাই অপেক্ষা করছেন কেমন হবে নোভা বাদশা’র বিয়ে তা দেখার জন্য। চিড়িয়াখানার চিকিৎসক সাহাদাত হোসেন শুভ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ৫ সেপ্টেম্বর বর বাদশাকে রংপুর থেকে চট্টগ্রাম আনা হয়েছিল । ২০০৫ সালের ১৬ জুন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জন্ম হয়েছিল সিংহ শাবক ‘বর্ষা’ ও ‘নোভা’র।
দুই বোনের জন্মের কিছুদিন পর তাদের মা ‘লক্ষ্মী’ এবং ২০০৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাবা ‘রাজ’ মারা যায়। এরপর আর কোনো নতুন সিংহ চিড়িয়াখানায় আনা হয়নি।
একই সঙ্গে চিড়িয়াখানায় আর কোনো পুরুষ সিংহ না থাকায় ‘বর্ষা’ ও ‘নোভা’ কুমারী থেকে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও উপযুক্ত পুরুষ সিংহ না পাওয়া তাদের ঘর-সংসার করাও হয়ে ওঠেনি।
সম্প্রতি সংবাদপত্রের মাধ্যমে রংপুর চিড়িয়াখানায় দুটি পুরুষ সিংহ’র খবর পান চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। এরপর বর্ষা ও নোভার মধ্য থেকে একজনকে রংপুর চিড়িয়াখানার সঙ্গে অদলবদল করার বিনিময়ে পুরুষ সিংহ বাদশাকে আনা যাবে এ আলোচনায় উপনীত হন দুই চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
এর পর বর্ষাকে অপর সিংহ রাজার সঙ্গী হিসেবে গত ২৮ আগস্ট চট্টগ্রাম থেকে রংপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। আর নোভার জন্য নিয়ে আশা হয় বাদশাকে।
ডেপুটি কিউরেটর মনজুর মোরশেদ জানান, রংপুর থেকে বাদশাকে দুটি লোহার খাঁচায় করে ট্রাকে চড়িয়ে নিয়ে আসা হয়। পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য এবং দুটি সিংহ যাতে মারামারি না করে সে জন্য পৃথক খাঁচায় পাশাপাশি রাখা হয়।
ভ্রমণের ক্লান্তি এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি বাদশা। তারপরও পাশাপাশি দুটি খাঁচায় কনে নোভার সঙ্গে ভাব বিনিময়ের পাশাপাশি দর্শকদের আনন্দও দিয়ে আসছিল বাদশা।
বাদশাকে প্রতিদিন পাঁচকেজি মুরগির মাংস দেওয়া হলেও সে এখনো সর্বোচ্চ চার কেজি পর্যন্ত খেতে পারছে। শক্ত হওয়ায় এখনো গরুর মাংস দেওয়া হয়নি তাকে।