Search
Close this search box.

ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

ঝিনাইদহে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রাজাকারদের নাম!

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ:

1470906595
.

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় চিহ্নিত রাজাকারদের নাম উঠে এসেছে। অথচ নিয়মিত ভাতাসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন তারা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় ভুয়াদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতারা বেকায়দায় পড়েছেন।

গেজেট মোতাবেক হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ২৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকা ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৬ জন ভুয়া বা অমুক্তিযোদ্ধা। উপজেলার ভাতুড়িয়া গ্রামের ডাঃ রইচ উদ্দিন এবং পারফলসী গ্রামের সামছুল হকসহ চিহ্নিত রাজাকার ও পিচ কমিটির সদস্য রয়েছেন বেশ কয়েকজন।

২০১৩-২০১৪ সালে প্রকাশিত গেজেট মোতাবেক যারা তালিকাভূক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে উলেখযোগ্য ব্যক্তিরা হলেন-উপজেলার ভাতুড়িয়া গ্রামের ডাঃ রইচ উদ্দিন, আহাদ নগর গ্রামের ওমর আলী, ফলসী গ্রামের মনিরজ্জামান। এছাড়াও ১ ডিসেম্বর ২০০৫ তারিখে বিএনপি জোট সরকারের সময়ে হরিণাকুন্ডু উপজেলায় কমপক্ষে ১৯ জনের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, এ উপজেলায় ২৩৫ জনের মধ্যে ২০০ জন মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার মাসিক সম্মানী ভাতা পেয়ে থাকেন। মাসিক ১০ হাজার টাকা করে সম্মানী গ্রহন করে থাকেন তারা। ২০৩ জনের মধ্যে ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান, মৃত্যু বরনের কারনে, এবং ওয়ারেশ না থাকায় ভাতা বঞ্চিত রয়েছেন।

আবার ৬৬ জন মুক্তিযোদ্ধার লাল মুক্তি বার্তা নেই। ডাঃ রইচ উদ্দীন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পিচ কমিটির সদস্য হিসেবে রাজাকারদের সহায়তা করেছেন বলে জানান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা। সেই রাজাকার অর্থের বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে নিয়মিত ভাতা তুলে যাচ্ছেন।

এছাড়া অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার নাম সরকারী গেজেট, অতিরিক্ত গেজেট, বিশেষ গেজেট ও লাল মুক্তি বার্তায় না থাকলেও অর্থের বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম উঠিয়ে ভাতা উত্তোলন করে যাচ্ছেন। ভাতা প্রাপ্ত মক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ৮ জন জামায়াতের সক্রিয় নেতাকর্মী।

এরা হলেন- উপজেলার ভায়না গ্রামের বুলুবারী, আজিবর রহমান, মোহাম্মদ আলী, জোড়াদহ গ্রামের ডাঃ বারী, কামারখালী গ্রামের আবুবক্কর, ভেড়াখালী গ্রামের শের আলী, শিতলী গ্রামের নাজিম উদ্দীন, পার্বতীপুর গ্রামের আশরাফ আলী মাস্টার। এদের মধ্যে অনেকে আবার পুলিশ হত্যা মামলার আসামী হয়েছেন।

প্রকাশিত গেজেট সুত্রে জানা গেছে, ৬৬ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে উপজেলার কাপাশহাটিয়া গ্রামের ইবাদৎ হোসেন, ওসমান খাঁ, আজগর আলী, শিতলী গ্রামের ইবাদৎ হোসেন, শ্রীপুর গ্রামের জানু চেয়ারম্যান, বাক্কা সরকার, মিজানুর রহমান মন্টু, ছবের আলী, দোবিলা গ্রামের মোশাররফ হোসেন, রামনগরের আমিরুল, জোড়াদহ গ্রামের লিয়াকত আলী, জিয়াউদ্দীন, হরিশপুর গ্রামের আব্দুল লতিফ, ইজাল উদ্দীন, আইয়ুব বিডিআর, ভায়না গ্রামের ইছাহক, পোলতাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল হাকিম মোলা, রঘুনাথপুরের আবু মুসা, এ্যাড. মফিজুর রহমান কাকু, কালাপাহাড়িয়া গ্রামের মুনিব আলী, কেষ্টপুরের ইসাহক আলী, সোনাতনপুর গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান আবুবকর সিদ্দিক, নতিডাঙ্গা গ্রামের আনসার আলী, ভাতুড়িয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন, মুসা ফকির, বাসুদেবপুর গ্রামের আফজাল হোসেন, গাড়াবাড়িয়া গ্রামের গহর আলী, নারায়নকান্দি গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান। বিগত ৬ বছরে উপজেলায় ৫জন মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে মুক্তিযোদ্ধা অফিস সূত্র জানিয়েছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, কোটায় চাকরি, মাসিক ভাতা এবং মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা লাভের জন্য স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় যারা ৮-৯ বছরের শিশু এবং রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত তারাও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভূক্ত হয়েছে।

এছাড়াও সোনাতনপুর গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান আবুবকর সিদ্দিকের ৩ ছেলে ১ মেয়ে ও ভাতুড়িয়া গ্রামের মুসা ফকিরের সন্তান ভুয়া সনদে কোটায় পুলিশে চাকরী নিয়েছেন।

এ সব তদন্ত হওয়া জরুরী বলে মনে করেন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা। সিদ্দিক চেয়ারম্যানের সনদ বাতিল, চাকরির সুষ্ঠু তদন্ত ও ভাতা বন্ধের দাবি জানিয়ে এলাকাবাসির পক্ষে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক ও দুদকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন দৌলতপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ছাব্দার রহমান।

এ বিষয়ে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মকবুল হোসেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, বর্তমান সময়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল থেকে অনেকেই তালিকাভূক্ত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলে যাচাই-বাচাই করে ভুয়াদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে জেলা কমান্ডার আরও বলেন, বিভিন্ন সময়ে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাসহ রাজাকারদের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এ অবস্থায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের রক্ষার জন্য প্রভাবমুক্ত যাচাই-বাছাই জরুরি বলে মনে করেন তিনি। অন্য একটি সূত্র জানায়, এ উপজেলায় বিভিন্ন সময়ে ৬৬ জনের নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ কৌশিক খান সূত্রে জানা গেছে, ২০০ জন মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার মাসিক সম্মানী ভাতা পেয়ে থাকেন। প্রতি মাসে ২০ লাখ টাকা সরকার থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়।

এছাড়া টাকার বিনিময়ে আরো ২৩৫ জনের একটি খসড়া তালিকা প্রস্তুত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কমান্ডার মহিউদ্দীন আহম্মেদের বিরুদ্ধে। যা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাচাই করে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করা হবে।

অন-লাইনে আবদন করা ওই তালিকা থেকে শতকরা ৪/৫ জন ব্যাক্তির নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হতে পারে বলে জানান হরিণাকুন্ডু উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার শামসুল আলম।

অমুক্তিযোদ্ধা ও ভুয়াদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে উত্তোলন করা মাসিক ভাতার টাকা সরকারী কোষাগারে ফেরৎ নেয়ার দাবী জানিয়েছেন হরিণাকুন্ডু উপজেলার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাগন।

হরিণাকুন্ডু উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মহিউদ্দীন জানান, যে সমস্থ মুক্তিযোদ্ধারা ভুয়া, রাজাকার এবং সক্রিয় জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত ও পিচ কমিটির সদস্য তাদের ভাতা অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিৎ। স্বাধীনতা বিরোধীদের ভাতা বন্ধ এবং সরকারী সমস্থ সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে জোর দাবি জানান।

সর্বশেষ

বন্যার পানি কমছে, দুর্ভোগ-দুশ্চিন্তা বাড়ছে

আজ মহাষ্টমী কুমারীপূজা

নোয়াখালীতে বিএনপি নেতা আবেদের মোটরসাইকেল শোডাউন

পূজামণ্ডপে ইসলামী গান গেছে বিতর্ক : অভিযুক্তদের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার : ডিসি

মীরসরাইয়ে প্রবীণ বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

বাটি নিয়ে ভিক্ষা করুন, সন্তানরা এমন কথা বলায় ঝাঁপ দিয়ে নিজেদের শেষ করে দিলেন বাবা-মা

সবাই বাংলাদেশী, আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেইঃ ইসরাফিল খসরু

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print