
কক্সবাজার শহরের কলাতলী ডলফিন চত্বর সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কয়েকটি ভাসমান দোকান ও সিএনজি অটো রিকশাকে চাপা দিলে এক আইনজীবি ও এক নারীসহ ৩ জন নিহত ও কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়েছে।
আজ শনিবার (০৬) মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ট্রাক চাপায় সড়কের পার্শে পার্কিংয়ে থাকা ধুমড়ে মুচড়ে যায় ২টি ভাসমান দোকান, ২টি সিএনজি ও ১টি টমটম।
নিহত তিনজন হলেন-কক্সবাজার জেলা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রথম ব্যাচের মেধাবী ছাত্র অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ওসমান, কক্সবাজার শহরের কলাতলী এলাকার লাল মিয়ার স্ত্রী মোমেনা বেগম (৬০) ও কক্সবাজারে বেড়াতে আসা রাজধানীর উত্তরা এলাকার শাহাদাত হোসেন (৪৫)।
এর মধ্যে অ্যাডভোকেট ওসমান চট্টগ্রাম থেকে তাঁর কর্মস্থল কক্সবাজার শহরে এসে গাড়ি থেকে নেমে স্ত্রী ও ছেলেসহ বাসায় যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় উঠছিলেন। অপরদিকে, কক্সবাজারে বেড়ানো শেষে ঢাকায় ফেরার জন্য বাস কাউন্টারে যাচ্ছিলেন শাহাদাত হোসেন।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার এসআই আনোয়ার জানান, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার অভিমূখে আসা একটি সিমেন্টবাহী ট্রাকের চাপা পড়ে একটি যাত্রীবাহী সিএনজি ধুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে সিএনজি আরোহী এক ব্যক্তি ঘটনাস্থলে নিহত হয়। অপর ২ জন হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যায়।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে সিমেন্ট বোঝাই করে কক্সবাজার যাওয়া একটি ট্রাক কলাতলী ডলফিন চত্বরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে তুলে দেয়। ট্রাক চাপায় ধুমড়ে মুচড়ে যায় ভাসমান দোকান, সিএনজি ও টমটম।
এসময় তাৎক্ষণিক মূমুর্ষু অবস্থায় নারীসহ ২জন কে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে তাদের মৃত্যু হয়। পরে ট্রাকের নিচ থেকে আরও ৩ জনকে উদ্ধার করে হাসতাপালে নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া হাসপাতালে আরও ৫ জন গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
দুর্ঘটনার সময় সিসিটিভি ফুটেজ-
এদিকে খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালায় পুলিশ ও দমকল বাহিনী। উদ্ধার তৎপরতা কাজে সহায়তা করেন মেয়র মুজিবুর রহমান, সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানের নেতৃত্বে নেতাকর্মীসহ স্থানীয়রা।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান বলেন, এখানে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ স্টেশন ও দোকান। যার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে।
ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান বলেন, দিনে-রাতে শহরে ট্রাকসহ বড় গাড়িগুলো অনায়সে ঢুকছে। যার কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ঠ মহলের পদক্ষেপ জরুরী হয়ে পড়েছে।
সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ছুটে আসি। কলাতলী পর্যটন এলাকা। এখানে প্রচুর পর্যটক আসছে। এই ব্যস্ততম সড়কে বেপরোয়াভাবে যান চলাচল করে। সড়ক আইন থাকলেও অনেকেই মানছেন না। তাই সম্মিলিতভাবে সড়ক আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন ব্যাপক জনসচেতনতা। কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হবে। যারা এর জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই রিপোর্ট লিখাকালে দমকল বাহিনী উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।