ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ আগুনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১, নিখোঁজ ৪০০

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

আগুনে বিধ্বস্ত কক্সবাজার উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আরও ৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১ জনে। এদিকে, আগুন নিভে যাওয়ার পর আজ বেরিয়ে আসছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র।

আগুন কেড়ে নিয়েছে সবকিছু; মাথা গোজার ঠাঁই, খাদ্য ও পানি নিয়ে চরম দুর্ভোগে রোহিঙ্গারা। অগ্নিকাণ্ডের পর শতাধিক শিশুসহ ৪শ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে দাবি করেছেন শরণার্থী শিবিরের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানিয়েছে গতকাল সোমবার বাংলাদেশের কক্সবাজারে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) পরিচালিত তিনটি ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ৪৫,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয়স্থল বাসস্থান হারিয়েছে।

.

আগুনে প্রায় ১০,০০০-এর বেশি আশ্রয়স্থল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং ক্যাম্পে আইওএম-এর সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ধ্বংস হয়েছে। ২৪-ঘন্টাব্যাপী সেবাপ্রদানকারী এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র গতবছর প্রায় ৫৫,০০০ মানুষকে সেবা প্রদান করেছিল। এই ক্ষয়ক্ষতির ফলে কোভিড-১৯ চিকিৎসাসেবায় নতুন করে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে।

শিবিরগুলোর মধ্যে আগুনের লেলিহান গতি ক্যাম্পের ভেতরের প্রধান সড়ক, পাহাড়ের ঢাল, খাল এবং ধানের ক্ষেতে পৌঁছানোর পরেই কেবল কমে যায়। কিন্তু ততক্ষণে হাজার হাজার মানুষের আশ্রয়স্থল, প্রয়োজনীয় সেবাকেন্দ্র এবং ব্যক্তিগত সম্পদ সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যায়।

অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনো অজানা। মানবিক সহায়তাকারী সংস্থাগুলো এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ১১ জন মানুষ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন, ৫০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন এবং আনুমানিক ৪০০ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

আইওএম-এর মহাপরিচালক এন্টোনিও ভিটোরিনো বলেনঃ “এই বিপর্যয় একটি ভয়াবহ ধাক্কা যা কক্সবাজারের শরণার্থীদের মানবিক প্রয়োজনকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। আমাদের এই পুনর্বাসনের জন্য আমার শূণ্য থেকে শুরু করতে হবে। আমরা বাংলাদেশ সরকার, আমাদের দাতাগোষ্ঠী, সহযোগী সংস্থা এবং মানবিক সহায়তাকারী সংস্থাগুলোর সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্থদের নিরাপদ আশ্রয় ফিরিয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।“

তাৎক্ষণিক পরিস্থিতিতে, দমকল বাহিনী, সেনাবাহিনী এবং মানবিক সহায়তাকারী সংস্থাগুলোসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো ঘটনাস্থলে দ্রুত ছুটে যায় এবং আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। আইওএম আহতদের সকলকে সেবা দিতে এবং মানসিক স্বাস্থ্য ও মনো-সামাজিক সহায়তা দেওয়ার জন্য সংস্থাটির অ্যাম্বুলেন্স এবং ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল দল মোতায়েন করেছে। ঘটনাস্থলে রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবকরা প্রথম সেবাপ্রদানকারী ছিলেন, লোকজনকে সুরক্ষায় সহায়তা করেছিলেন, আগুন নেভানোর কাজে সহায়তা করেছিলেন এবং ত্রাণ কার্যক্রমে কাজ করেছিলেন। আইওএম-এর বিভিন্ন টিম এবং সহযোগী সংস্থাগুলো অগ্নিকাণ্ড থেকে বেঁচে আসা মানুষদের তাৎক্ষণিক সেবা দিতে রাতের বেলা কাজ করেছিলেন।

আজ মঙ্গলবার এই পরিবারগুলো আবার তাদের নিজ নিজ আশ্রয়স্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। আইওএম সকল ক্ষতিগ্রস্থদের জরুরি সহায়তা বিতরণ করছে। জরুরী সহায়তার মধ্যে আশ্রয় সরঞ্জামাদি এবং খাবার পানির পাশাপাশি জরুরি জিনিসপত্র যেমন মাস্ক, সাবান, কম্বল, সোলার লাইট, মশারি এবং জেরিক্যান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বর্ষার শুরুর সাথে সাথে আশ্রয়গুলোর পুনর্নির্মাণ জরুরী হয়ে পড়েছে। আইওএম মানুষকে টেকসই আশ্রয়স্থল, পানি, স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলির পাশাপাশি গত বছর থেকে চলমান কোভিড-১৯-এর স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র পুনর্গঠন করতে সহায়তা করবে। আইওএম-এর জরুরি তহবিল এই ত্রাণ কার্যক্রমে এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই অতি জরুরি প্রয়োজনের সহায়তা কার্যক্রমে আরও ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন।

এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ আগুনের তাণ্ডবের পর নতুন করে ঘর বাধার স্বপ্ন দেখছেন ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গারা। নিজের বসতঘরের ভিটেমাটিতে নতুন করে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছেন তারা।

ধ্বংস স্তূপ সরিয়ে অবুঝ শিশু নিয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন বাবা- মা। বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে নতুন করে মাথা গোঁজার ঠাঁই তৈরির চেষ্টা করছেন অনেকে। তবে এই সহায়তা কেউ পাচ্ছেন আবার কেউ পাচ্ছেন না। রয়েছে খাদ্য ও পানির সংকটও।

ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গারা বলেন, আগুন লাগার পর আসতে আসতে দেখি সব শেষ। ছাদ পুড়ে গেছে। ত্রিপল দিয়ে আছি। আপাতত কোনোভাবে থাকার ব্যবস্থা করেছি। শুধু পানি খেয়ে আছি।

অগ্নিকাণ্ডের পর নিখোঁজ রয়েছে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা শিশু। তাদের সন্ধানে কাজ করছে এনজিও সংস্থা।

এ প্রসঙ্গে ব্র্যাকের শিশু সুরক্ষা কর্মকর্তা অভি দেবনাথ বলেন, ১৫৫ জনের মতো শিশু হারিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ও ক্যাম্পে দায়িত্বে থাকা এপিবিএন’র কর্মকর্তারা।

কক্সবাজার ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম বলেন, তাদের আপাতত থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে স্থায়ী থাকার ব্যবস্থাও করা হবে। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রোহিঙ্গাদের ১০ হাজার পরিবার। একই সঙ্গে পুড়ে গেছে স্থানীয়দের ৬ শতাধিক ঘর ও দোকানপাট।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print