ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

বোয়ালখালীর মেয়ে মিনা পালের কবরী হয়ে উঠার গল্প

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

117754317 whatsappimage2021 04 17at1.20.33am বোয়ালখালীর মেয়ে মিনা পালের কবরী হয়ে উঠার গল্প
.

‘তুমি আসবে বলে, ভালোবাসবে বলে’ ‘তুমি যে আমার কবিতা’ কিংবা ‘সে যে কেনো এলো না’, ‘আবার দুজনে দেখা হল’-সহ আরো বহু জনপ্রিয় গানে তিনি মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। বাংলা চলচ্চিত্রে তিনি কখনো সাত ভাইয়ের এক বোন চম্পা কিংবা কিরণমালা হয়ে তরুণদের স্বপ্নে এসেছেন। তিনি মতির ময়না, সুজনের সখি, দেবদাসের পার্বতী কিংবা সারেঙ বউ খ্যাত মিষ্টি মেয়ে কবরী।

১৯৬৪ সাল, প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সুভাষ দত্ত তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবি ‘সুতরাং’ ছবিতে ‘পরানে দোলা দিলো এই কোন ভোমরা’ গানের মাধ্যমে মাত্র ১৩ বছরের এক কিশোরীকে নায়িকা হিসেবে দর্শকদের কাছে পরিচিতি করান। প্রথম ছবিতেই বাজিমাৎ। খেতাব পেলেন মিষ্টি মেয়ের।

117754319 whatsappimage2021 04 17at1.20.33am 1 বোয়ালখালীর মেয়ে মিনা পালের কবরী হয়ে উঠার গল্প
.

উর্দু ছবির ভিড়ে বাংলা চলচ্চিত্রের নায়িকা হিসেবে আস্থাভাজন হয়ে উঠেন কবরী। জনপ্রিয় সিনেমা সাত ভাই চম্পা, অরুন বরুন কিরণমালা, নীল আকাশের নীচে, ঢেউয়ের পরে ঢেউ, আবির্ভাব, দর্পচূর্ণ, দ্বীপ নিভে নাই, বিনিময়, আপন পর, কত যে মিনতি, ময়নামতি দিয়ে স্বাধীনতা পূর্ব বাংলা চলচ্চিত্রে হয়ে উঠেন সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকা। খ্যাতনামা পরিচালক জহির রায়হানের উর্দু ছবি ‘বাহানা’-তেও নায়িকা ছিলেন কবরী।

নায়ক রাজ রাজ্জাকের সাথে গড়ে উঠা জুটিটি বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় রোমান্টিক জুটি। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতা সংগ্রামের সাথে জড়িয়ে পড়ে নিজেকে আরো মহিমান্বিত করেন। নব্য বাংলাদেশে এই নায়িকা নিজেকে আরো পরিণত হয়ে উঠেন।

Kabori Sarwar 4 বোয়ালখালীর মেয়ে মিনা পালের কবরী হয়ে উঠার গল্প
.

অ্যাকশন ধারার চলচ্চিত্র রংবাজ, বেঈমান,গুন্ডা-তে যেমন অভিনয় করেছেন, তেমন কাজ করেছেন সাহিত্যনির্ভর চলচ্চিত্র তিতাস একটি নদীর নাম, সারেং বউ, দেবদাসের মত নন্দিত চলচ্চিত্রে। বাংলা চলচ্চিত্রে ভালোবাসার সিনেমার নাম নিলে যেই তিনটির নাম প্রথমসারিতে থাকে সুজন সখি, বধূ বিদায়, দুই জীবন-এর মত জনপ্রিয় চলচ্চিত্রেও তিনি মিষ্টি হাসিতে দর্শকদের ভুলিয়েছিলেন।

এছাড়া কাজ করেন লালন ফকির, চোখের জলে, দিন যায় কথা থাকে, মাসুদ রানা, আমার জন্মভূমি, আরাধনা-সহ আরো বহু ছবিতে। ষাট ও সত্তর দশকের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই নায়িকার সাথেই অভিষেক ঘটেছিল সফল পাঁচ নায়কের। তাঁরা হলেন – জাফর ইকবাল, ফারুক, আলমগীর, উজ্জ্বল ও সোহেল রানা। নায়িকাদের মাঝে এমন রেকর্ড আর কারো মাঝে নেই।

Kabori Sarwar 6 বোয়ালখালীর মেয়ে মিনা পালের কবরী হয়ে উঠার গল্প
.

বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে সুনির্বচনীয় এই নায়িকা আশির দশকে এসে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। নব্বই পরবর্তী সময়ে চরিত্রাভিনেত্রী হিসেবে কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এর মধ্যে দেমাগ, রঙিন নয়ন মনি, বিয়ের ফুল, আমাদের সন্তান, আয়না, মেঘের কোলে রোদ উল্লেখযোগ্য। পরিচালক হিসেবেও নিজেকে পরিচিত করেছিলেন ‘আয়না’ ছবিতে।

বাংলা চলচ্চিত্রের নায়িকাদের মধ্যে যাদের জনপ্রিয় গান সবচেয়ে বেশি – তাদের মধ্যে নি:সন্দেহে প্রথম সারিতেই থাকবে কবরী। সুজন সখি সিনেমার সেই বিখ্যাত গান ‘সব সখিরে পার করিতে’ কে বলা হয় প্রেম নিবেদনের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় গান। নিজের ক্যারিয়ারের সেরা নায়ক রাজ্জাকের সাথে অভিমানে ভেঙেছিলেন জুটি, প্রায় তিন দশক পর সেই অভিমান ভেঙে আবার হাজির রয়েছিলেন চলচ্চিত্রের পর্দায়।

Kabori Sarwar 1 বোয়ালখালীর মেয়ে মিনা পালের কবরী হয়ে উঠার গল্প
.

নায়করাজ রাজ্জাক চলচ্চিত্রের নীল আকাশের নীচে সর্দপে বিচরণ করতে পেরেছেন কবরীর মত নায়িকা পেয়েছেন বলে, মিঞা ভাই খ্যাত ফারুক চলচ্চিত্রের নীল দরিয়ায় নাও চালিয়ে সফল হয়েছিলেন কবরীকে পাশে পেয়েছিলেন বলে। বুলবুল আহমেদের ক্যারিয়ারেও সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকা কবরী। চিত্রনায়ক রিয়াজের কাছে তিনি চিরসবুজ নায়িকা। উপমহাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের ছবি ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ সিনেমার নায়িকা হয়েছিলেন।

বর্ণিল ক্যারিয়ারে অভিনেত্রী হিসেবে মাত্র একবার পেয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কার। কারণ, তিনি যখন ক্যারিয়ারের সুসময় কাটিয়েছিলেন তখনো এই পুরস্কার চালু হয়নি। কয়েক বছর আগে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন জাতীয় পুরস্কারের আসরে। মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারেও পেয়েছেন আজীবন সম্মাননা। এছাড়া পেয়েছেন বাচসাস পুরস্কার সহ আরো বহু পুরস্কার, পাশাপাশি হয়েছিলেন সংসদ সদস্য। সম্প্রতি প্রকাশ করেছেন নিজের আত্মজীবনী – ‘স্মৃতিটুকু থাক’।

Kabori Sarwar 3 বোয়ালখালীর মেয়ে মিনা পালের কবরী হয়ে উঠার গল্প
.

জন্ম হয় চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর খরন্দ্বীপ শ্রীপুর গ্রামে। -১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই। খুব কম ভক্তই জানেন যে কবরী তাঁর আসল নাম নয়। আসল নাম হল মিনা পাল৷ বাবা শ্রীকৃষ্ণ দাস পাল এবং মা শ্রীমতি লাবণ্য প্রভা পাল৷

চলচ্চিত্রে স্বপ্রতিভ হলেও ব্যক্তিজীবনে কিছুটা নিষ্প্রভ। ক্যারিয়ারের তুঙ্গে থাকা অবস্থায় বিয়ে করেন চিত্ত চৌধুরীকে। পরবর্তীতে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে করেন গোলাম সারোয়ারকে। তখন থেকেই তিনি কবরী সারোয়ার নামে পরিচিত। প্রায় তিন দশক সংসার করার পর তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি পাঁচ সন্তানের জননী।

ব্যক্তিজীবনে বর্ণিলতা কামনা করি।  শেষ জীবনে রাজনীতি নিয়ে তিনি ব্যাস্ত হয়ে উঠেছিলেন, পরে অভিনয় জগতে আর আসেন নি।  শেষ পর্যন্ত মহামারী করোনায় তার মৃত্যু হল শুক্রবার ( ১৬ এপ্রিল) মধ্য রাতে।

সর্বশেষ

চাঁদাবাজি-মব জাস্টিস কমেছেঃ সেনা সদর

মসজিদ-অফিসে এসি ২৫ ডিগ্রি রাখার নির্দেশনা

ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের শহীদ, আহতদের যোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে

আরব আমিরাত ও সৌদিতে ১১ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করবে সরকার

সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী মোনালিসা গ্রেফতার

করের আওতায় আসছেন গ্রামাঞ্চলের ব্যবসায়ী-চিকিৎসক-আইনজীবীরা

মৃত আত্নীয়কে দেখে বাড়ী ফেরা হলোনা স্বামী-স্ত্রী

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print