
রাজধানীর পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগার ঘটনায় বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
নিহত ৫ জনের মধ্যে ওই ভবনে ৪ জনের ও হাসপাতালে নেওয়ার পর সুমাইয়া নামের এক নারীর মৃত্যু হয়।
নিহতদের মধ্যে দুজন ছিলেন ওই ভবনের দারোয়ান। তাদের একজনের নাম রাসেল মিয়া এবং অপরজন ওলিউল্লাহ। এ দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ৩ কর্মীসহ অন্তত ২০ জন দগ্ধ হয়েছেন। তাদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনিস্টিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা ১৮ মিনিটে আরমানিটোলার হাজী মুসা ম্যানশন নামের একটি ছয়তলা ভবনের নিচতলায় অবস্থিত কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের চেষ্টায় ভোরের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দফতরের ডিউটি অফিসার মাহফুজ রিবেন বলেন, বাবুবাজার ব্রিজ সংলগ্ন আরমানিটোলা খেলার মাঠের পাশে একটি কেমিক্যাল গোডাউনে আগুনের খবর পাই রাত ৩টা ১৮ মিনিটে।
প্রথমে ছয়টি পরে ভয়াবহতায় আরও চারটিসহ মোট ১০টি ইউনিট পাঠানো হয়। পরে আরও বাড়িয়ে ১৯টি করা হয়। তারা ভবনের চারপাশে অবস্থান নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। এছাড়াও বাড়ির উপরের লোকজনকে উদ্ধারে ল্যাডার ইউনিট যুক্ত করা হয়েছে।
ভবনটির আতঙ্কিত বেশ কিছু বাসিন্দা ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে আগুনের কারণ জানা যায়নি বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দ হয়ে বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে বাসিন্দারা আটকে পড়েন। ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ অন্তত চার থেকে পাঁচজন আহত হয়েছেন। অগ্নিকানণ্ডের ঘটনায় বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। একজনকে দগ্ধ অবস্থায় বের করে আনা হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, এখানকার প্রায় ভবনের নিচে কেমিক্যালের গোডাউন। আগে এই এলাকায় সব কেমিক্যাল গোডাউনই ছিল। ধীরে ধীরে মানুষের বসবাস শুরু হয়। ভবনও বহুতল হতে থাকে। এলাকাটি বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবেই বেশি পরিচিত।
ভবনটিতে ১৮টি পরিবার বসবাস করে। অতিরিক্ত ধোঁয়ার কারণে আশপাশের ভবন থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আটকে পড়া অনেককেই মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হচ্ছে। গ্রিল কেটে, গ্রিল ভেঙে, জানালা ভেঙে, ছাদের দরজা ভেঙে আটকে পড়াদের উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে হাজির হয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন।