ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

হৃদয় ও তার মামার স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে গেল

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

ppppppp
.

মা রত্মা বিশ্বাস পেশায় একজন পোশাক শ্রমিক। বাবা রতন বিশ্বাস দিনমজুরী করে সংসার চালান। টানাপোড়েনের সংসারে ঘর আলো করে জন্ম নেয় এক শিশু। নাম রাখা হয় হৃদয়। হৃদয় বড় হয়ে মানুষের মতো মানুষ হবে এ স্বপ্ন বুনতে থাকে রত্মা আর রতন। মানুষ করতে গেলে ছেলেকে পড়ালেখা শেখাতে হবে। এ প্রত্যয় নিয়ে রত্মার বাপের বাড়ির কধুরখীল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণিতে ভর্তি করায় হৃদয়কে।

প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় হৃদয় বি-গ্রেডে পাশ করে। সে যাই হোক ফলাফল। খুশির ঝিলিক দেয় বাপ মায়ের হৃদয়ে। মামা ছোটন দে ও দিদার ইচ্ছায় কধুরখীল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয় হৃদয়। অষ্টম শ্রেণিতে জিপিএ ৩ পয়েন্ট পেয়ে ২০১৪ সালে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয় সে। শিক্ষকরায় মানবিক বিভাগে রেজিষ্ট্রশন করে দেয়। সেই সাথে কৃষিশিক্ষা বিষয়ও নিতে হয় হৃদয়কে।

নবম শ্রেণিতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলে হৃদয়। নবম শ্রেণির ষান্মাসিক গণিত ও ইংরেজী বিষয়ে অকৃতকার্য হয় হৃদয়। বার্ষিক পরীক্ষায় আবারো গণিত ও ভূগোলে অকৃতকার্য হয় হৃদয়। মানবিক বিভাগের এ ছাত্রকে মানবিক বিবেচনায় দশম শ্রেণিতে উর্ত্তীণ করে দেয় বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

দশম শ্রেণিতে নবম শ্রেণির একই বই পড়ে, প্রাইভেট শিক্ষক রেখে, নিয়মিত বিদ্যালয়ের পাঠ গ্রহণ করে ও কোচিং করে হৃদয় ষান্মাসিক পরীক্ষায় দুই বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। টেস্টেও পাশ করতে পারেনি সে।

এসএসসিতে ফরম পূরণের জন্য শিক্ষকদের কাছে অনুরোধ করলেও শিক্ষকরা দশম শ্রেণিতে হৃদয়কে মানবিকতা না দেখিয়ে পরের বছর ২০১৬ সালের জানুয়ারির ২০তারিখ বিদ্যালয়ে যেতে বলেন। সে সময় শিক্ষকরা হৃদয় কয় বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছিল তাও জানায়নি।

এসএসসি পরীক্ষা দিতে না পারায় হাতের কাজ শিখানোর তোড়জোড় চলে হৃদয়ের মা-বাবার। মামা ছোটন দে তাতে বাঁধ সাধেন। মামা ছোটন দে’র একান্ত প্রচেষ্টায় শিক্ষকদের কথা মতো দ্বিতীয় বারের মতো দশম শ্রেণিতে ভর্তি করিয়ে দেয় হৃদয়কে। প্রি-টেষ্টে আবারো দু’বিষয়ে অকৃতকার্য। টেস্টে এসে আবারো অকৃতকার্য।

এবার এসএসসি পরীক্ষা দিতে না পারলে আর দেয়া হবে না। কেন না রেজিষ্ট্রেশনের মেয়াদ ফুরিয়ে যাবে। সেই সাথে শেষ হবে হৃদয়ের মামার স্বপ্ন। শেষ হলে শেষ হয়ে যাক তাতে শিক্ষকদের কি আসে যায়।

মানবিকের এ ছাত্রকে এতটুকু মানবিকতা দেখায়নি শিক্ষকরা। তার উত্তরে মেলে এসএসসিতে ফলাফল ভালো না হলে এমপিও ভুিক্ত বাতিলসহ নানা জটিলতায় পড়তে হবে বিদ্যালয় ও শিক্ষকদের। তাই কিছুই করার নেই।

হৃদয়ের মতো হাজারো অভিভাবকদের প্রশ্ন কেন তিন বছর একই বই পড়ে পাশ করে না ছাত্ররা। উত্তর মেলে না। এ ব্যর্থতা কে নেবে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী না অভিভাবক। প্রশ্ন আরো রয়েছে তাদের নবম শ্রেণিতে কেন শিক্ষার্থীর পছন্দকে মূল্যায়ন করা হয় না। শিক্ষকদের চাপিয়ে দেয়া বিষয়ে রেজিষ্ট্রেশন ও পড়তে হবে।

বিদ্যালয়ের বেতন, পরীক্ষার ফি, কোচিং ফি, অন্যান্য ফিসহ ঘরের দু’বেলা দুইজন প্রাইভেট শিক্ষকের সম্মানীর বোঝা তিন বছর ধরে টানছে হৃদয়ের মামা ছোটন দে। তার বড় সাধছিল ভাগ্নে মানুষ হবে। হল কই অভিভাবকরা আর এ বোঝা টানতে পারছে না। তাই বোয়ালখালী উপজেলার পূর্ব গোমদন্ডী বুড়ি পুকুর পাড়ের একটি গ্রিল ওর্য়াকসপে কাজ শিখতে দেয়া হয়েছে হৃদয়কে।

মামা ছোটন দে জানান, হৃদয়ে মা বারবার বকা দিচ্ছে কেন এক বছর আগে কাজ শিখতে দিইনি তাকে। তবে দু:খ শুধু একটায়, ভাগ্নেকে পড়ালেখা শেখাতে পারলাম না। নিজে বেশিদূর পড়তে পারিনি বলে ভাগ্নেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলাম।

এভাবে প্রতিবছর হাজারো হৃদয়ের পড়ালেখার পাঠ চুকে দশম শ্রেণিতে। এতে কোনো মা-বাবা, মামার স্বপ্ন পূরণ হয় না এ জীবনে। বেঁচে থাকার সংগ্রামে হয়ত কোনো না কোনো কাজ বেছে নেয় হৃদয়রা।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print