
চট্টগ্রামে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. অলি উল্লাহর উপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ৪ আসামীর মধ্যে ২ জনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। দুই মহিলা আসামীকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার (১৫ ফেব্রয়ারী) বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ( সিএমএম)-১ এর ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেব এ আদেশ দেন। এর আগে দুপুরে ৪ আসামীকে আদালতে হাজির করে এক প্তাহের রিমান্ডের আবেদন জানায় পাঁচলাইশ থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের মধ্যে বেলজিয়াম প্রবাসী আসামী রানা মর্তুজা (৪৫)কে ৫ দিন, ও চালক আবদুর রহিমকে ২ দিন রিমাণ্ড, দুই নারী আসামী মাছুমা সুলতানা (৩৫), জিদান সুলতানা (২৮) জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ।
আদালত আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
পাঁচলাইশ থানার ওসি (তদন্ত) সাদেকুর রহমান আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টায় জিইসি মোড়ে ওয়েল ফুডের সামনে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে কর্মরত ম্যাজিস্ট্রেট মো. অলি উল্লাহর উপর হামলা চালায় আসামীরা।
পুলিশ জানায়, নগরের জিইসি মোড়ে ওয়েল ফুডের সামনে দিয়ে রাত ১০টায় হেঁটে যাওয়ার সময় ম্যাজিষ্ট্রেট অলি উল্লাহকে ধাক্কা দেয় রানার গাড়ি। এর প্রতিবাদ করলে রানা গাড়ি থেকে নেমে বিচারককে ঘুষি মারেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে রাত ১১টার দিকে ৪ জনকে আটক করে। আটক রানা মরতুজা বেলজিয়াম প্রবাসী। কিছুদিন আগে তিনি দেশে এসেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার পর গাড়িতে থাকার রানা বন্ধু শিশির মাহমুদ (৪০) পালিয়ে যায়।
জানাগেছে, আসামী রানা মর্তুজা বেলজিয়াম প্রবাসী। তাঁর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী। তিনি চট্টগ্রামে তাঁর বোনের বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন।
মামলার বাদী আবুল কালাম আজাদ বলেন, গতকাল রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অলি উল্লাহ তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে নগরের জিইসি মোড়ের একটি কফি শপ থেকে বেরিয়ে হেঁটে গোলপাহাড় মোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় একটি ব্যক্তিগত গাড়ি বিচারককে ধাক্কা দেয়। তিনি এই ঘটনার প্রতিবাদ জানালে গাড়িতে থাকা পাঁচজন নেমে তাঁকে কিলঘুষি মারতে থাকেন। বিচারক তাঁর পরিচয় দেওয়ার পরও আসামিরা তাঁকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করতে থাকেন। বিচারক স্বামীকে মারতে বারণ করলে স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার চেষ্টা করেন নারী আসামিরা। একপর্যায়ে বিচারক ও তাঁর স্ত্রীকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন আসামিরা। পরে পথচারীরা এসে তাঁদের উদ্ধার করেন। মারধরে বিচারকের একটি দাঁতের কিছু অংশ ভেঙে যায়। এ ছাড়া তিনি হাতে ও বুকে আঘাত পান। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গত রাতে চিকিৎসা নেন।