
বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় ভারতীয় ট্রলিং ফিশিংবোটের দাপটে সাধারণ জেলেরা মাছ ধরতে পারছে না। ধ্বংস হচ্ছে ছোট মাছের পোনা। দিন শেষে নানাভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছে উপকূলের বিভিন্ন অঞ্চলের জেলেরা।
বঙ্গোপসাগর থেকে ফিরে আসা শরণখোলার রাজেস্বর গ্রামের ফিশিংবোট মা-বাবার দোয়ার মাঝি লিটন হাওলাদার, রাজৈর গ্রামের মায়ের দোয়া বোটের মাঝি মো. ইউসুফ, খোন্তাকাটা গ্রামের এফবি কারিমা বোটের মাঝি ইউনুসসহ অন্য কয়েকটি ফিশিংবোটের মাঝিরা অভিযোগে জানান, বর্তমানে সাগরে বাংলাদেশ জলসীমায় ভারতীয় ট্রলিং ফিশিংবোট অবাধে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের দুবলারচর, কুয়াকাটা উপকূল, সোনারচর, গঙ্গামতি থেকে আরো পূর্ব দিকে গিয়ে মাছ ধরছে। ভারতীয় বোটের কারণে তারা ঠিকমত সাগরে জাল ফেলতে পারে না। ভারতীয় শক্তিশালী বোট তাদের জালের ওপর দিয়ে চালিয়ে যায় ফলে জাল ছিঁড়ে যায়। প্রতিবাদ করলে ভারতীয়রা মারমুখী আচরণ করে বলে জানান ঐ মাঝিরা। অন্য দিকে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ট্রলিং ফিশিংবোটবহর বেপরোয়াভাবে সাধারণ ফিশিংবোটের জাল ছিঁড়ে চলে যায়। ট্রলিংবোটের জালে মারা পড়ছে ছোট ছোট বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা। এতে ধ্বংস হচ্ছে সাগরের মৎস্য সম্পদ।
বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, বঙ্গোপসাগরে ভারতীয় ফিশিংবোট ও চট্টগ্রামের ট্রলিংয়ের দাপটে সাধারণ জেলেরা সাগরে মাছ ধরতে পারছে না। গত ১৫ দিনের মধ্যে সাগরে জাল নষ্ট করায় তিনি চট্টগ্রামের এক ট্রলিংবোট মালিকের কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করেছেন।
এছাড়া গতকাল বুধবার সকালে বরগুনা জেলা মৎস্য দপ্তর আয়োজিত ইলিশ উন্নয়ন সংক্রান্ত এক সভায় সাগরে ভারতীয় ট্রলিং ট্রলারের দাপটের বিষয়টি তুলে বক্তব্য রেখেছেন ঐ সভায় বরগুনা-১ আসনের এমপি ধীরেন্দ্র নাথ দেবনাথ শম্ভু।
বাংলাদেশ ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এম সাইফুল ইসলাম খোকন বলেন, ভারতীয় জেলে ও ট্রলিং ট্রলারের কারণে সাগরে মাছ ধরায় সমস্যা হচ্ছে। গত এক মাসে শরণখোলা অঞ্চলের অর্ধশত ফিশিংবোটের জাল নষ্ট করেছে ট্রলিং ট্রলারের জেলেরা। ফলে বোটমালিকরা লাখ লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন মোংলার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে বলেন, বঙ্গোপসাগরে কোস্ট গার্ড নিয়মিত টহল দিচ্ছে। ভারতীয় ট্রলার দেখা মাত্র তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয় এবং মাঝে-মধ্যে দুই-একটি ভারতীয় ট্রলার ধরা পড়ে। তবে দেশীয় ট্রলিংয়ের বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ নেই। সূত্র: ইত্তেফাক।