
খাগড়াছড়ির রামগড়ের সেই ইউএনও খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাতের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেয়ার আদেশ হাইকোর্টের আপিল বিভাগেও বহাল রয়েছে।
আজ সোমবার(৯ জানুয়ারি) সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দীকীর নেতৃত্বে বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসাইন এর পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ শুনানী শেষে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। একইসাথে আদালত তিন মাসের মধ্যে রীটটিও নিস্পত্তি করতে বলেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন রীটকারীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেওয়া ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম।
শুনানীতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোরশেদ। ইউএনও এর পক্ষে ছিলেন এডভোকেট আহসানুল করিম। এর আগে গত ৬ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ইউএনওর বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেয়ার আদেশ বহাল রাখেন।
উল্লেখ্য, গত ২৩ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুজন দিনমজুরের কারাদণ্ড দেয়ার ঘটনায় খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাতের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নিতে হাইকোর্টে রীট দায়ের করা হয়। গত ২০ নভেম্বর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার দিনমজুর আবুল কালাম ও রুহুল আমিনকে দেয়া সাজা কেন অবৈধ হবে না এবং তাদের কেন ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসাথে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দু’জন দিনমজুরের কারাদণ্ড দেয়ার ঘটনায় খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাতকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা থেকে বিরত রাখতে নির্দেশ দেন আদালত। জনপ্রশাসন সচিব ও খাগড়াছড়ির ডিসিকে এ নির্দেশ কার্যকর করতে বলা হয়। ওইদিন বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছিলেন।
এদিকে হাইকোর্ট কর্তৃক বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া সেই ইউএনও অষ্ট্রেলিয়া চলে গেছেন গত ৮ জানুয়ারি। এরই প্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ২২ জানুয়ারী পর্যন্ত তার সরকারি ছুটি মন্জুর হয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বর এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন। কিন্তু তিনি অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার আগে নিজে মামলা থেকে বাঁচতে এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাও করিয়েছেন। অন্যদিকে রীটকারী দিন মুজুর আবুল কালামকে জোর করে ধরে এনে বিভিন্ন কাগজে স্বাক্ষরও নেন। সেই স্বাক্ষর করা কাগজকে হলফনামা বানিয়ে ইউএনওর হাইকোর্টকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।
তবে দিনমুজুর আবুল কালাম ও রুহুল আমিন হাইকোর্টে গিয়ে ইউএনও কর্তৃক জোর করে স্বাক্ষর নেয়ার বিষয়টি লিখিতভাবে হাই কোর্টের নজরে আনেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে তোলপাড় হয়।