চট্টগ্রামে মিনহাজুল ইসলাম রাফি (২০) নামে এক তরুণকে থানায় নিয়ে পুলিশ মানষিক নির্যাতনের পর বাসায় ফিরে সে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল বুধবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে নগরীর লালখান বাজার টাংকির পাহাড় এলাকার বাসা থেকে গলায় মাফলার পেঁচানো ঝোলানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার আগে তার মা-বাবাসহ পুলিশ তাকে সিএমপির কোতোয়ালী থানায় ডেকে নিয়ে একটি নারী ঘটিত ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও মানষিক নির্যাতন করে।
নিহত রাফি একই এলাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক মো. মামুনের ছেলে।
রাফির মা রানু বেগম জানান, এক তরুণীর সঙ্গে তার ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই তরুণী অভিভাবক কোতোয়ালী থানায় অভিযোগ করেছেন, আমার ছেলের মোবাইলে ওই মেয়ের ছবি আছে। বুধবার কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরমান হোসেন তাদের কল দিয়ে থানায় যেতে বলেন। সন্ধ্যায় তারা থানায় যান। অনেকক্ষণ তার কক্ষে তাদের বসিয়ে রাখেন। এক পর্যায়ে রাফির মোবাইল নিয়ে নেন। এরপর দুই লাখ টাকা দাবি করেন। নয়তো তার ছেলেকে গ্রেপ্তার করে আদালতে চালান করে দেওয়ার ভয় দেখান।
রানু বেগম আরও বলেন, ‘আমি আর তার বাবা আধাঘণ্টা ওসি তদন্তের পা ধরে ছিলাম। তিনি দুই লাখ টাকা দাবি করেছেন। আমাদের সঙ্গে থাকা ৫ হাজার টাকা আছে জানালে উনি তার কক্ষের বাথরুমে রেখে আসতে বলেন। সেখানে টাকা রেখে আসার পর আমাদের ছেড়ে দেন। বাকি টাকা ২৪ তারিখের মধ্যে দিতে বলেন।’ পরে থানা থেকে বাসায় ফিরেই রাত ১১টার দিকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন রাফি জানান তার মা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে সম্প্রতি রাফির বিরুদ্ধে নগরীর ফিরিঙ্গিবাজার এলাকার এক তরুণী কোতোয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন। এতে অভিযোগ করা হয়, রাফির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়ে তারা একসঙ্গে কিছু ছবি তোলেন। তরুণীর মা-বাবা বিষয়টি জানার পর তারা রাফির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে নিষেধ করেন।
অভিযোগে বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওবায়দুল হক বলেন, থানায় মানষিক নির্যাতনের বিষয়টি ঠিক নয়। এক তরুণীকে উক্তক্ত করার অভিযোগে তদন্তের স্বার্থে যুবকটিকে তার অভিভাবকসহ থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন ওসি তদন্ত। তিনি খুবই ভালো অফিসার। তিনি মানষিক নির্যাতন এবং টাকা চাওয়ার মত লোক না। ছেলেটির মোবাইল ফোনে অভিযোগকারী মেয়ের ছবি পাওয়া যায়। হয়তো মা বাবাকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের কারণে তার ইগুতে লেগেছে। সে কারণে সে আত্মহত্যা করতে পারে।
এদিকে খুলশী থানার উপ-পরিদর্শক জামাল উদ্দিন বলেন, বাসার ছাদের সিলিংয়ের সঙ্গে গলায় মাফলার পেঁচানো ঝোলানো অবস্থায় ওই তরুণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। আজ বৃহস্পতিবার তার ময়না তদন্ত হচ্ছে।