
সোমালিয়ার বন্দরে জলদস্যূদের হাতে আটক বাংলাদেশী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে ভারতীয় নৌ বাহিনী কর্তৃক উদ্ধারের যে খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে তা সঠিক নয় বলে দাবী করেছে জাহাজ মালিক কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে জিম্মিদের স্বজনরা।
আজ শনিবার ইন্ডিয়ান টুডে,ইন্ডিয়ান একপ্রেসসহ ভারতের কয়েকটি মিডিয়ায় বলা হয়, ছিনতাইকৃত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে উদ্ধার করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী।যদিও সেসব সংবাদের ভেতরে এই বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা নাই।পরে জানা যায়, মাল্টিজ পতাকাবাহী একটি একটি জিম্মি জাহাজকে উদ্ধারে ভারতের নৌবাহিনীর প্রচেষ্টাকেই দেশটির মিডিয়া এমভি আব্দুল্লাহের সাথে মিলিয়ে ফেলেছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে এমভি আব্দুল্লাহ’র মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া এডভাইজার মিজানুল ইসলাম বলেন, ওই মিডিয়াগুলো কোথা থেকে এসব লিখেছে জানিনা। তবে বিষয়টি মিথ্যা।জিম্মি জাহাজ সোমালিয়ার উপকূল থেকে ৪ নটিক্যাল মেইল দূরে নোঙর করা আছে।আজকে ( শনিবার) এপর্যন্ত নাবিকদের সাথে আময়াদের কোন যোগাযোগ হয়নি।জলদস্যুদের সাথেও কথা হয়নি।’
বাংলাদেশ মেরিন অফিসার্স এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘জিম্মি জাহাজ উদ্ধার করা হয়েছে বলে যেটা লেখা হচ্ছে সেটা গুজব। তারা গত ১৪ তারিখ রেসকিউ করার চেষ্টা করেছিল শুনেছি।তবে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।আর এই চেষ্টাকেই মিডিয়া উদ্ধার হয়েছে বলে প্রচার করছে হয়তো।
এদিকে জাহাজ উদ্ধার হয়েছে কি-না জানতে চাইলে জিম্মি নাবিক নুরুদ্দিনের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন,’ এটা সত্য নয়।মিডিয়া এসব ভুলভাল বিষয় কোথায় থেকে নিয়ে আসে,সেটি বোধগম্য হচ্ছে না।’
ভারতীয় গণমাধ্যমের সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ে ভারতীয় নৌবাহিনীর ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্ট ঘুরে দেখা যায়, সংস্থাটির এক্স হ্যান্ডলে সর্বশেষ আজ সকাল ৯টা ৪৩ মিনিটে একটি টুইট করা হয়। টুইটটিতে বলা হয়, ‘জাহাজ এমভি রুয়েন ব্যবহার করে সোমালি জলদস্যুরা জাহাজ ছিনতাই করতে যাচ্ছিল। ভারতীয় নৌবাহিনী সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে। মাল্টার পতাকাবাহী এমভি রুয়েন ২০২৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর ছিনতাই করে সোমালি জলদস্যুরা। জলদস্যুরা জাহাজটি নিয়ে গভীর সমুদ্রের দিকে যাচ্ছে জানতে পেরে ভারতীয় নৌবাহিনী সেটিকে বাধা দেয়।’
গতকাল শুক্রবার ভারতীয় নৌবাহিনী জলদস্যুদের অধিকারে থাকা এমভি রুয়েনকে বাধা দেয় উল্লেখ করে টুইটে বলেছে, ‘এই নৌযানকে ভারতীয় নৌবাহিনী ১৫ মার্চ জাহাজটিকে বাধা দেয়। সেই জাহাজের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ব্যবস্থা নিতে গেলে দস্যুরা ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষা ও জলদস্যুতা মোকাবিলায় এবং জাহাজ ও নাবিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে জলদস্যুদের নিষ্ক্রিয় করতে ন্যূনতম শক্তি প্রয়োগ করা হয়।’ পরে ভারতীয় নৌবাহিনী এমভি রুয়েনে থাকা জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ এবং নৌযানটিতে কোনো বেসামরিক নাগরিক থাকলে তাদের মুক্তি দেওয়ার আহবান জানায়।
ধারণা করা হচ্ছে- এই রুয়েন উদ্ধারের চেষ্টাকেই বাংলাদেশের জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ’র সাথে মিলিয়ে ফেলেছে ভারতের মিডিয়া।
মহাসড়কের মীরসরাইয়ে ডাকাতি প্রস্তুতিকালে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৫ ডাকাতকে দেশিয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল শনিবার (১৬ মার্চ) দিবাগত রাত ২টার দিকে মীরসরাই উপজেলার বড়দারোগাহাট কমরআলী রাস্তার মাথা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার চর এলাহি এলাকার আবু সিদ্দিকের ছেলে মো. খোকন (২৮), একই এলাকার জামাল মিয়ার ছেলে মো. মোস্তফা প্রকাশ চৌধুরী (৩৫), চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার মুছাপুর এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে মো. সুমন মিয়া(৩৩), বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার কেদারপুর এলাকার মৃত আলতাফ আলীর ছেলে মো. রাসেল হোসেন(৩৩) ও কুমিল্লা জেলার লাঙ্গলকোট উপজেলার দক্ষিণ শাকতলী এলাকার মো. মোস্তফার ছেলে মনসুর আলম (৩৬)।
মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মহাসড়কে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে উপজেলার বড়দারোগাহাট এলাকা থেকে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। আটকের ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।