ইতোমধ্যেই রুচিশীল মানুষের পছন্দের শীর্ষে স্থান করে নিয়েছে বুটিকের পোশাক। তবে সেই পোশাকে যদি থাকে শতভাগ হাতের কাজ তাহলে আর পছন্দ না হয়ে যায় কই? তেমনি একটি বুটিক হাউজ হলো ‘কৃষ্টি’।
বন্দর নগরী চট্টগ্রামের ১৮, মেহিদীবাগে একটি আর অপর শো-রুম রয়েছে আফমী প্লাজার ৩২৫ নং দোকানে।
কৃষ্টি বুটিক হাউজের নান্দনিক বৈশিষ্ট্যই হলো হাতের কাজ। শুধু দেশে নয়, এই খ্যাতি দেশের বাহিরেও। আর তাই প্রতিবছর কৃষ্টির কাজের একটা বিশাল অংশ ইউরোপের পাঠাতে হয়। এমনটিই জানালেন- ইন্টারন্যাশনাল ওমেন এসএমই এক্সপো ২০১৫-এ সেরা উদ্যোক্তার পুরষ্কার অর্জনকারী, কৃষ্টি বুটিক ঘরের ডিজাইনার ও সত্ত্বাধিকারী নূজহাত নূয়েরী কৃষ্টি।
নূজহাত নূয়েরী কৃষ্টি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ পড়ে এমবিএ পড়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল বিশ্ববিদ্যালয়ে। দেশে ফিরে গ্রামীণফোন, বৃটিশ কাউন্সিলসহ হাই প্রোফাইল কার্পোরেট জবও করেছেন। প্রকৌশলী আদনানের সাথে বিয়ে সূত্রে চট্টগ্রাম, তারপর স্থির হলেন বুটিক হাউজে।
ফ্যাশন ডিজাইনার নূজহাত নূয়েরী কৃষ্টি’র মুখোমুখি হয়েছেন পাঠক নিউজের প্রতিবেদক মুনীর ফারুক।
তাদের সে আলাপচারিতা তুলে ধরা হলো পাঠকদের উদ্দেশ্যে-
পাঠক.নিউজ: উন্নত ক্যারিয়ার ছেড়ে কেন এই পেশায়?
কৃষ্টি: ছোট কাল থেকেই আমি হাতের কাজের জামা-কাপড় পছন্দ করতাম। হাতের কাজের প্রতি রয়েছে আমার প্রচন্ড দুর্বলতা। বাবা-মা’র সাথে আড়ংয়ের শো রুম থেকে কাপড় কিনতাম। কিন্তু আড়ং একই ডিজাইনের বেশকিছু কাপড় তৈরী করতো। তাই একটা ক্ষোভও থাকতো। আমি যেটা পড়বো সেটা অন্য কেউ কেন পড়বে? মূলত সেই থেকেই আমার এই পেশায় আসা। এখন আমি নিজে এক ডিজাইন একাধিক করি না।
পাঠক.নিউজ: কত বছর কাজ করছেন?
কৃষ্টি: শো-রুম দিয়ে ৩ বছর। আর ঘরোয়াভাবে ৫ বছর।
পাঠক.নিউজ: এই ৫ বছরে অর্জন কী?
কৃষ্টি: বড় অর্জন হলো- মানুষের ভালোবাসা। আমাদের প্রোডাক্ট মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। দেশে একটা শ্রেণীর ক্রেতা সৃষ্টির পাশাপাশি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আমাদের কাপড় সাপ্লাই হচ্ছে।
পাঠক.নিউজ: যান্ত্রিক উৎকর্ষতার যুগে হাতের কাজের চ্যালেঞ্জ কী?
কৃষ্টি: হাতের কাজের প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো অপর্যাপ্ত কারিগর। যারা কাজ জানে তারাও সব সময় একটা অনিশ্চয়তায় থাকে। কখন ব্যবসায় বন্ধ হয়ে যায়, তারা আবার কখন বেকার হয়ে যায়। এর অবশ্য কারণও আছে, ইতোপূর্বে অনেকেই হাতের কাজ নির্ভর ব্যবসায় করতে এসে সফল হতে পারেন নি।
পাঠক.নিউজ: বিদেশী কাপড়ের ভীড়ে আপনাদের অবস্থা কী?
কৃষ্টি: এটা একটা বড় সমস্যা দেশীয় শিল্পের জন্য। কিছুটাতো চ্যালেঞ্জের বিষয় বটেই। তবে রুচিশীল, সচেতন মানুষ দেশী পোশাকেই সব সময় মনোযোগী।
পাঠক.নিউজ: এ ঈদের ডিজাইনে কোন রঙ প্রাধান্য দিয়েছেন এবং কেন?
কৃষ্টি: এবার ঈদকে সামনে রেখে নীল, বেগুনী, কমলা, মেরুন অর্থাৎ জমকালো রঙের কাজে প্রাধান্য দিয়েছি। হালকা রঙের কাজ করলে পোশাকগুলো সাধারণত জমকালো প্রোগ্রামে ব্যবহার করতে পারেনা। সখের পোশাক যদি সব উৎসবে ব্যবহার করতে না পারে তাহলে গ্রাহকের আফসোসও তৈরী হতে পারে। আমরা সেই সুযোগ রাখছি না।
পাঠক.নিউজ: নারী উদ্যোক্তা হিসেবে কোন সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন?
কৃষ্টি: না, এক্ষেত্রে নারীরা প্রথম বাঁধার মুখোমুখি হয় ঘরে। আর আমার স্বামী-সংসার সব সময় আমার পাশে ছিল। এখনো প্রেরণা দিয়ে যাচ্ছেন।
পাঠক.নিউজ: ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?
কৃষ্টি: দিন দিন যে প্রচার প্রসার, উন্নতি লাভ করছি তাতে আমার স্বপ্ন আরো বড় হচ্ছে। আশা করছি অনেক দূর যাওয়ার।