ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

টেকনাফে জঙ্গীদের বৈঠক শেষে হরিণ শিকার!

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

কক্সবাজারের সীমান্তবর্তী উপজেলা টেকনাফের হোয়াইক্যং বনাঞ্চলে সৌখিন শিকারীদের হাত থেকে বাঁচানো যাচ্ছে না মায়াসহ চিঙ্কারা হরিণ। গভীর বনাঞ্চলে বিদেশী সহ আরএসও জঙ্গী নেতাদের সাথে গোপন বৈঠক শেষে ফেরার পথে হরিণ শিকার করেন জঙ্গীরা। বিষয়টি বনবিভাগের নজরে আসার প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। হরিণ শিকারে জড়িত বাহারছড়া এলাকার মৌলভী রফিকের নেতৃত্বে একদল সৌখিন শিকারী। ইতোপূর্বে শামলাপুর বনবিটের সেগুন বাগানের বেআইনী ভাবে বন্য হরিণ শিকারের অভিযোগে সৌখিন শিকারীদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল। এরপরেও দমানো যাচ্ছে না এসব শিকারীদের।

এলাকাবাসি ও বিভিন্ন সুত্রে জানাগেছে, কক্সবাজার দক্ষিণ বনভিাগের হোয়াইক্যং রেঞ্জ ও শামলাপুর গভীর বনাঞ্চলের সেগুন-গর্জন বাগানে বর্তমানে অসংখ্য মায়াসহ চিঙ্কারা হরিণের বিচরণ লক্ষনীয়। বনবিভাগের অব্যাহত অভিযান এবং নানা আইন করেও এই বনাঞ্চলে থামানো যাচ্ছে না সৌখিন শিকারিদের। কাঠুরিয়াদের কবল থেকে রেহাই পেলেও মায়াসহ চিঙ্কারা হরিণ বেপরোয়া সৌখিন শিকারিদের হাত থেকে রেহাই মিলছেন । ফলে ধীরে ধীরে হোয়াইক্যং রেঞ্জ ও শামলাপুর বনে মায়াসহ চিঙ্কারা হরিণের সংখ্যা দিনদিন কমে আসছে ।

স্থানীয়রা জানান, সৌখিন শিকারীদের কাছে হরিণের মাংস অতি লোভনীয়। তাই অনেকটা প্রকাশ্যেই চলছে সেগুন ও গর্জন বনের আশপাশের এলাকাগুলোতে হরিণ শিকার। বনাঞ্চল থেকে প্রতি সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিনটি হরিণ শিকার করা হচ্ছে।
তাছাড়া অনেক ‘সৌখিন’ দাবি করা মানুষও হরিণের চামড়া ও শিং সংগ্রহে রাখার জন্য হরিণ শিকারে উৎসাহ দিচ্ছেন। হরিণের চামড়া ও শিং চড়া দামে কিনে নিয়ে বাসার দেয়ালেই টানিয়ে রাখেন অনেকে।

.

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সুত্রে জানাগেছে, আরএসও সহ জঙ্গীদের নিরাপদ ঘাটি হচ্ছে বাহারছড়া। ঘরে ভেতর বৈঠক করা ঝুঁকি ও লোক চক্ষুর আড়ালে থাকার জন্য তারা হোয়াইক্যং রেঞ্জের শামলাপুর গভীর বনের ভেতর গোপন বৈঠক করতে যান। ফেরার পথে তারা বেআইনিভাবে হরিণ শিকার করেন। গত বছরের ২৫ জুন বাহারছড়া ইউনিয়নের অরণ্যঘেরা একটি মাদ্রাসায় একদল বিদেশি নাগরিকের রহস্যজনক বৈঠক চলছিল। খবর পেয়ে পুলিশও যায় সেখানে। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে বিদেশিরা আশ্রয় নেয় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মৌলভী আজিজের ঘরে। তবে ওই বাড়িতে বিদেশিদের সঙ্গে পুলিশকে দেখা করতে কিংবা কথা বলতে দেননি ইউপি চেয়ারম্যান।

এর আগে গত বছর ১৬ জুলাই শামলাপুরের একটি বাড়িতে গোপন বৈঠক চলাকালে সহকারী কমিশনার (ভুমি) নেতৃত্বে বিজিবি-পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিদেশী নাগরিক সহ ৪ জঙ্গীকে গ্রেফতার করেছিল।

এঘটনায় টেকনাফ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের হাবিলদার মোঃ বাবুল মিয়া বাদী হয়ে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে জঙ্গীবাদে সম্পৃক্ত ১২ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা (মামলা নং-৮৮, জিআর-৪২৮/১৬,তাং-৩১/০৭/২০১৬ইং) দায়ের করেন। ওই মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান মৌলভী আজিজ উদ্দিন ও তার ভাই ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী রফিক উদ্দিনকে আসামী করা হয়। পরে তারা দলীয় পরিচয়ে এবং কতিপয় পুলিশকে অঢেল টাকায় ম্যানেজ করে মামলার চার্জসীট থেকে বাদ পড়ে। তারাই এখন বনের ভেতর গিয়ে গোপন বৈঠক করেন এবং বন্যপ্রাণী শিকার করছেন।

অভিযোগ রয়েছে, দেশের অখন্ডতা জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন, জনসাধারণের মধ্যে আতংক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে হত্যা, গুরুতর জখম ও অপহরণ রাষ্ট্রের সম্পত্তি ক্ষতি সাধন তথা সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অর্থ সংগ্রহের জন্য ষড়যন্ত্রমুলক গোপন পরিকল্পনা ও আশ্রয় দানে জঙ্গী সংগঠন আরএসও’র গোপন বৈঠক করছিল। বৈঠক থেকে আটক ও পলাতক ব্যক্তিরা নিজেদের সরকার দলীয় লোক দাবী করে গোপনে গভীর বনের ভেতর বৈঠক করে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।

তবে বন বিভাগ জানিয়েছে, শিকারিদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত আছে। কিন্তু লোকবলের স্বল্পতা এবং শিকারিদের কাছে থাকা আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের বিরুদ্ধে তারা তেমনটা পেরে ওঠছেন না। হোয়াইক্যং রেঞ্জের শামলাপুর বনবিটের আওতাধীন ১৯৯৮ সালের সেগুন বাগানের মতুরাঘোনা নামক স্থানে বন্যপ্রাণী হরিণ শিকারের ঘটনা ঘটে ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টায়। সরকারী সংরক্ষিত বনে প্রবেশ করে বন্যপ্রাণী হরিণ মারা হয়। এঘটনায় ১৯২৭ সনের যাহা ২০০০ সালে সংশোধিত ২৬ (১-ক)(চ) এবং বন্যপ্রাণী আইনের ২৩ অনুচ্ছেদের ২৬ (১-ক) ধারায় অপরাধ সংগঠিত করার অপরাধে মামলা নং-পিওআর ১৫ (শামলাপুর), ৩১/১২/২০১০ইং দায়ের করা হয়।

মামলার আসামীরা হচ্ছে, বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর পুরানপাড়ার মৌলভী নাছিরের ছেলে মৌলভী রফিক (বর্তমান টেকনাফ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান), একই এলাকার মৃত হাজী মোহাম্মদের ছেলে আবুল কালাম, অলি আহম্মদের ছেলে মৌলভী শফিকুর রহমান ও শামলাপুর নয়াপাড়ার মৃত হাজী জাফর আলীর ছেলে গোলাম শরীফ। এই মামলার আসামীদের মধ্যে মৌলভী রফিক সহ অনেক সৌখিন শিকারী বর্তমানে গভীর বনের ভেতর হরিণ শিকারে জড়িত বলে জানাগেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, বন্য হরিণের মাংস দিয়ে বিদেশীদের ভুঁড়ি ভোজ করার জন্যই শিকার। ফলে প্রায়ই হরিণ শিকারে বেপরোয়া হয়ে ওঠছে সৌখিন শিকারীরা। হরিণ শিকার করতে শিকারিরা ফাঁদ (জাল) ব্যবহার করে। তবে মাঝে মাঝে আগ্নেয়াস্ত্রও ব্যবহার করে তারা। সৌখিন শিকারিরা সাধারণ মানুষ ছদ্মবেশে বনের গহীনে প্রবেশ করে বলে জানা যায়।

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ আলী কবির জানান, বিশাল এলাকায় আসলে পাহারা দেয়া সম্ভব নয়। এছাড়াও লোকবল সংকটের কারণে গাছ পাহারা দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়ছে। হরিণ শিকারের তথ্য পেলে সাথে সাথে অভিযানের পাশাপাশি জড়িতদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print