ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

বিপর্যস্ত হালদা নদী রক্ষায় ১১ সুপারিশ পেশ

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী রক্ষায় হাটহাজারী পিকিং পাওয়ার প্লান্টসহ অক্সিজেন থেকে কুলগাঁও পর্যন্ত শিল্প-কারখানা এবং এশিয়ান পেপার মিলসহ অন্যান্য শিল্প কারখানায় ইটিপি স্থাপন ও ব্যবহার বাধ্য করাসহ ১১টি সুপারিশ করেছে হালদা নদী রক্ষা কমিটি।

আজ শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ উপস্থাপন করেন হালদা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনজুরুল কিবরীয়া।

লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, গত ১৯ জুন ২০১৮ রাত থেকে হালদা নদী ব্যাপক দুষণ আগ্রাসনের শিকার হয়। গত ২০-২১ জুন পর্যন্ত হালদা নদী এবং এর অববাহিকার বিলগুলোতে ব্যাপক হারে মাছ মরে ভেসে উঠে। হালদা নদী নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সম্পৃক্ততা থাকা স্বত্ত্বেও এ ধরনের সমস্যা আমাদের কাছে সম্পূর্ণ নতুন। এমতাবস্থায় কয়েকটি সরকারি সংস্থা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরি ও বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় আমরা হালদা নদী রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে গত ২১ জুন থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত হালদা নদীর বিভিন্ন অংশ থেকে পানির নমুনা পরীক্ষা, মৃত মাছ সনাক্ত এবং নদী দূষণের উৎস সনাক্ত করার চেষ্টা করি।

.

তিনি বলেন, প্রথম বারের মত হালদা নদীতে বিপর্যয়ের এমন অশনি সংকেত দেখা দিয়েছে এবং এর প্রতিক্রিয়া হবে সুদূরপ্রসারী। এর কারণ উৎঘাটনে ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতে হালদার জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে। কারণ আপনারা জানেন কয়েক বছর ধরে হালদা দূষণের বিষয়ে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করে আসছি। যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নিলে আজ হয়ত এই বিপর্যয় প্রতিহত করা সম্ভব হতো।

হালদা নদী রক্ষা কমিটির উপদেষ্টা শামসুল হক হায়দরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, নদী রক্ষায় বর্তমান সরকার বিগত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি আন্তরিক। বালি মহাল বন্ধ, ড্রেজার নিষিদ্ধকরণসহ হালদা রক্ষায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ তার প্রমাণ বহন করে। তাছাড়াও কিছু বেসরকারি সংস্থাও ইতোমধ্যে হালদার পরিবেশ ও মা মাছ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে যার প্রেক্ষিতে মা মাছ এবার অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ডিম ছেড়েছে। গত ২১ থেকে ২২ জুন পর্যন্ত হালদা নদী থেকে সর্বোচ্চ ১৫ কেজি ওজনের মৃত মৃগেল ব্রড মাছ, ৫/৬ কেজি ওজনের আইড় এবং প্রায় ২ দশমিক ৫ কেজি ওজনের বামোস, চিড়িং, চেউয়া, কুচিয়া, বুরগুনি মাছসহ প্রায় মৃত ১৮ প্রজাতির মাছ ও ২ প্রজাতির চিংড়ি সনাক্ত করি। এখানে উল্লেখ্য, হালদা নদীতে মৃত ভেসে উঠা মাছগুলোর মধ্যে তলদেশীয় মাছের আধিক্য লক্ষ্য করা যায়।

.

সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ্য করা হয়, কর্ণফুলীর মুখ, হাটহাজারী খন্দকিয়া খালের মুখ, কাটাখালী খালের মুখ, মাদারিখালের মুখ, রামদাশ হাট এলাকা, নাপিতের ঘোণা, আজিমের ঘাট, মাছুয়া ঘোণা, সর্তারঘাট এলাকাসহ ১১টি পয়েন্টে পানির নমুনা পরীক্ষা করি। আমাদের পর্যবেক্ষণে ছায়ার চর থেকে রামদাস মুন্সির হাট পর্যন্ত এলাকায় পানির প্রচন্ড দুর্গন্ধযুক্ত ও কালো বর্ণের পানি পরিলক্ষিত হয়। পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন খুব কম (০ দশমিক ২১ থেকে ১ দশমিক ০০ মিলি/লি) পাওয়া গেছে যা মাছের বসবাসের উপযোগী নয়। নমুনা পরীক্ষায় নদীর উজানের চেয়ে ভাটি এলাকায় দূষণের মাত্রা বেশি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রাউজানের আজিমের ঘাট থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকায় দূষণের মাত্রা (গড় দ্রবীভূত অক্সিজেন ১.০১ মিলি/লি) তুলনামূলক বেশি ছিল। সাধারণত প্রতি লিটার পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের স্বাভাবিক মাত্রা থাকে ৫ মিলিগ্রাম। কিন্তু হালদার পানিতে গড়ে পাওয়া গেছে ২ মিলিগ্রামের চেয়েও কম। তাছাড়াও খন্দকিয়া খাল ও কাটা খালির মুখে দ্রবীভূত অ্যামোনিয়ার পরিমাণ ছিল খুব বেশি। যা স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে প্রায় ১০০ গুন বেশী। শাখা খালগুলোর মুখে এবং বিক্ষিপ্ত কিছু জায়গায় পানির উপরের স্তরে তেল ভাসতে দেখা যায়। সুতরাং কম পরিমাণ দ্রবীভূত অক্সিজেন এবং অতিরিক্ত মাত্রার অ্যামোনিয়ার বিষক্রিয়া হালদা নদীতে মাছের মৃত্যুর অন্যতম কারণ।’

সংবাদ সম্মেলনে হালদা রক্ষায় যে সব সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়েছে সেগুলো মধ্যে আছে, হাটহাজারীর নন্দীর হাটস্থ স্থানীয় মরা ছড়া খালের বর্জ্য ডাম্পিং স্থায়ীভাবে বন্ধের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, বিক্ষিপ্তভাবে গড়ে উঠা পোল্ট্রি ফার্মসমূহের দূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, অনন্যা আবাসিক এলাকার ভরাট হয়ে যাওয়া বামনশাহী খাল পুনঃখনন করে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনা, অনন্যার মাস্টার ড্রেনেজ সিস্টেমকে বামনশাহী খাল এবং কুয়াইশ খাল থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা, অনন্যা আবাসিক এলাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এসটিপি স্থাপন করা, শিকারপুর ও মাদার্শা এলাকার ছোট খাল ও ছড়াসমূহ খনন করার মাধ্যমে পানির প্রবাহ বাধামুক্ত করা, অবিলম্বে হালদা নদীকে পরিবেশগত বিপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করা, হালদা নদী ব্যবস্থাপনায় সমন্বয় সাধনের জন্য ‘হালদা নদী কমিশন’ গঠন করা এবং হালদা নদীকে ‘জাতীয় নদী’ ঘোষণার মাধমে এই নদী রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তাছাড়া হালদা নদীর পানি দূষণে প্রধান চারটি কারণও উল্লেখ করা হয়।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সহ সভাপতি চৌধুরী ফরিদ।

উপস্থিত ছিলেন হালদা রক্ষা কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রেজা মুজাম্মেল, সদস্য আমিনুল ইসলাম মুন্না, হালদা নদীর ডিম সংগ্রহকারী কামাল উদ্দিন সওদাগর, আশু বড়ুয়া, শ্রীধাম জলদাস, দুলাল জলদাস, রোগাংগীর আলম প্রমুখ।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print