
জেলার বোয়ালখালীতে পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি’র সম্মেলন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বোয়ালখালী উপজেলা শহীদ মিনার চত্বরে এই সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল।
সিপিবি নেতৃবৃন্দের অভিযোগ- উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি থাকার পরও পুলিশ সম্মেলন করতে দেয়নি। পুলিশের এই ধরনের আচরণকে সরকারের গণতান্ত্রিক পরিবেশের পরিপন্থি বলে মন্তব্য করেছেন নেতৃবৃন্দ। সরকারের মধ্যে লুকিয়ে থাকা কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নেতৃবৃন্দের কারণে সরকারের অনেক অর্জনই ব্যর্থ হচ্ছে। মত প্রকাশের ক্ষেত্রে এই ধরনের হস্তক্ষেপ বন্ধের জোর দাবি জানান সিপিবি নেতৃবৃন্দ।
তবে বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিমাংশু কুমার দাস রানা বলেন, তাদের ঘরোয়া পরিবেশে সমাবেশ করার কথা বলেছিলাম। তবে প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় তাদের সম্মেলন করতে দেয়া হয়নি।
এদিকে সম্মেলন করতে না পারার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় চট্টগ্রাম জেলা কমিউনিস্ট পার্টির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশী বাধার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সিপিবি কেন্দ্রীয় সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, একটি নিয়মতান্ত্রিক, সুশৃঙ্খল সম্মেলনে পুলিশের বাধার যে ঘটনা ঘটেছে, সেটা খুবই ন্যাক্কারজনক। সিপিবি নিয়ম মেনে চলা একটি পার্টি। এজন্য সিপিবি সম্মেলনের আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নিয়েছে। এটি পুলিশী রাষ্ট্র নয়, এটি একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এই ধরনের আচরণ পুলিশ এবং সরকারের স্বৈরাচারি চেহারার নমুনা। এই ধরনের আচরণ গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে বিপন্ন অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কোন ধরনের অগণতান্ত্রিক, স্বৈরাচারী কর্মকান্ড সিপিবি সহ্য করবে না। যে স্থানে সম্মেলন করতে পুলিশ আমাদের বাধা দিয়েছে, সেই একই স্থানেই পরবর্তীতে আমরা অবশ্যই সম্মেলন করব।
সংবাদ সম্মেলনে কমিউনিস্ট পার্টি চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অশোক সাহা বলেন, সারাদেশে চলমান উপজেলা শাখার সম্মেলন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সব ধরনের নিয়ম মেনে উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করেই আমরা সম্মেলনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করি। উপজেলা প্রশাসন আমাদের অনুমতিও দিয়েছেন। সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলা শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য নেতাকর্মীরা জড়ো হচ্ছিলেন। এসময় বোয়ালখালী থানা পুলিশের একটি টিম এসে সম্মেলনস্থল ঘিরে ফেলে। তারা জানতে চান, ব্যানারে সরকার বিরোধী কথাবার্তা কেন লেখা হয়েছে! একপর্যায়ে তারা কোন ধরনের সমাবেশ করতে দিবেন না বলে জানান। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে তিন নেতাকে আটক করা হয়, যদিও পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, পুলিশের অভিযোগ- আমাদের লিফলেট ও আমন্ত্রণ পত্রে সরকার উৎখাতের কথা আছে। কিন্তু এরকম কিছুই নেই। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা আমরা করেই থাকি। লিফলেটে তাই ছিল। আমরা ২৫ জুলাই সম্মেলনের অনুমতি চেয়ে থানায় আবেদন করেছিলাম।
পুলিশ অনুমতি দিতে তালবাহানা করে। এরপর পুলিশ এসে আমাদের সম্মেলনে বাধা দিয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কথা চিন্তা করে আমরা আগেই স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টার ঠিক করে রেখেছিলাম। শহীদ মিনারে সম্মেলন করতে না দেয়ায় আমরা ওই কমিউনিটি সেন্টারে সম্মেলন করতে চাইলাম। কিন্তু পুলিশ সেই হলে তালা লাগিয়ে দেয়, সেখানেও আমাদের অনুষ্ঠান করতে দেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার প্রাক্তণ সভাপতি মৃণাল চৌধুরী, সিপিবি বোয়ালখালী থানা সভাপতি অধ্যাপক কানাই দাশ, সাধারণ সম্পাদক জামাল আবদুল নাসের, সহ-সম্পাদক সেহাব উদ্দিন সাইফু প্রমুখ।