
নব গঠিত চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির প্রথম সভায় উপস্থিত ছিলেন না সিনিয়র সহ-সভাপতি‘র পদ পাওয়া আবু সুফিয়ান। সোমবার বিকালে নগর বিএনপির নাসিমন ভবনস্থ কার্যালয়ের সামনে নতুন কমিটির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম বক্করকে দেয়া সংবর্ধনা সভায় আবু সুফিয়ান উপস্থিত না থাকায় দলীয় নেতা কর্মীদের মধ্যে গুঞ্জন উঠে।
দীর্ঘ ৬ বছর পর চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির ৫ সদস্যের পূর্ব কমিটি ভেঙ্গে ৩ সদস্যে কমিটির ঘোষণা দেয় কেন্দ্রিয় বিএনপি।
সরকার বিরোধী আন্দোলনকে চাঙ্গা এবং আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিকে ঢেলে সাজাতে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হলেও এতে কোন্দল না কমে বরং বেড়েছে।
ফলে বিএনপির প্রথম সভায় ৩ সদস্যের একজন (আবু সুফিয়ান) উপস্থিতিতি না থাকায় দলের নেতা কর্মীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
এদিকে কাঙ্খিত পদ না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছেন নতুন কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি আবু সুফিয়ান।
তার এক ঘনিষ্ট্য অনুসারি নগর বিএনপির সাবেক নেতা বলেন, ম্যাডাম বলেছিলেন, আবু সুফিয়ানকে সভাপতি এবং ডা. শাহাদাতকে সাধারণ সম্পাদক করেই চট্টগ্রাম নগর বিএনপি’র নতুন কমিটি গঠন করা হবে। কিন্তু তা করা হয়নি। এ জন্য চট্টগ্রামের দলের কেন্দ্রিয় নেতাদের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন না প্রকাশে অনিচ্ছুক এ নেতা।

এদিকে আবু সুফিয়ানকে নগর সভাপতি না করায় প্রকাশ্যে আন্দোলন শুরু করেছে তার সমর্থিত নেতা কর্মীরা। সুফিয়ানকে সভাপতি পদ থেকে বঞ্চিত করে কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে চান্দগাঁও বিএনপি। সোমবার নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, এপ্রিল মাসে ঘোষিত বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদগুলি রদবদল করে হঠাৎ কিসের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে দলীয় হাইকমান্ড এধরনের হঠকারী কমিটি ঘোষণা করেছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।
বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান ভার্চুয়াল জগতের নেতা নন, তিনি রাজপথের অপ্রতিরোধ্য যোদ্ধা। ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি শুরু করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ডাকে সাড়া দিয়ে ৯০’র স্বৈরচার বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রসমাজের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে হমলা, মামলা ও অসংখ্যবার কারাভোগ করেছেন।
‘দলের প্রতটি দুর্যোগময় মুহূর্তে সামনের কাতারে নেতৃত্ব দিয়ে এখনো রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ পদবণ্টনের ক্ষেত্রে পাওয়ার হিসেবটা বরাবরই শূন্য, হয়েছেন অবহেলিত ও উপেক্ষিত। কিছু সুবিধাভোগী নেতার আবেগকে প্রশ্রয় দিতে গিয়ে হাই কমান্ডের এই ধরনের সিদ্ধান্তে নেতাকর্মীরা চরমভাবে ক্ষুব্ধ, হতাশ ও বিস্মিত। রাজপথের ত্যাগী ও সাহসী নেতাকর্মীদের মূল্যয়ন না করে বারবার সুবিধাভোগী নেতাদের দিয়ে রুপগত পরিবর্তন করে কমিটি ঘোষণা করলে এতে দলের গুণগত পরিবর্তন হবেনা। যা চলমান আন্দোলন সংগ্রামে বিরুপ প্রভাব ফেলবে।’
ত্যাগী ও সাহসী নেতার অবমূল্যায়ন সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্ব বিকাশে অন্তরায় উল্লেখ করে বক্তারা অবিলম্বে ঘোষিত কমিটি বাতিল করে আবু সুফিয়ানকে সভাপতি করে কমিটি দিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের অনুপ্রাণিত করতে দলের হাইকমান্ডের প্রতি জোর দাবি জানান।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে যুবদল নেতা আরিফুল ইসলাম, ছাত্রদল নেতা সাজিদ হাছান রনি, আবু বক্কর রাজু, সাইদুল ইসলাম, আব্দুল নবী, শহিদুজ্জামান, সঞ্জয় ভঞ্জ, আব্দুর রশিদ, ইমরান ভূইয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।