
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির’র কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক শাহ মুহাম্মদ মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন আমাদের দেশে যে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে তা দিয়ে আশানুরূপ জাতি গঠন করা কখনো সম্ভব নয়। কেননা এই শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে ধর্মের কোন রকম সম্পর্ক না থাকার কারণে এর ভিত্তিতে যে প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে তারা নানা রকম অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। তারা এই শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজেদেরকে পাশ্চাত্য ভাবধারায় এমনভাবে তৈরি করছে যেন সমাজ বা রাষ্ট্রের প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। এর ফলে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অফিস-আদালতে নিয়োজিত কর্মকর্তা কর্মচারীরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।
তিনি আজ ১৬ আগস্ট ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তরের ইসলামী শিক্ষা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
শিবির নেতা বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জ্ঞান অর্জন করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, খুন, হত্যা, ধর্ষণ, ইভটিজিং, মাদক ইত্যাদির সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নীতি নৈতিকতাহীন মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় ধর্মের সংশ্লিষ্টতা না থাকার কারণে জাতি আজ এরূপ হিংস্রতায় পরিণত হচ্ছে। শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যারাই জড়িত তারা দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার কথা বললেও ধর্মের উপর এলার্জি থাকার কারণে জাতিকে সুকৌশলে ধর্মহীণ করতে গিয়ে কঠিন সমস্যায় ফেলে দিচ্ছে। তৎকালীন শাসক গোষ্ঠীর চাপিয়ে দেয়া ধর্মহীন শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ১৯৬৯ সালের ১২ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত বিতর্কে ধর্মীয় বিষয় অর্ন্তভুক্ত করার ব্যাপারে যুক্তি ভিত্তিক কথা বলার কারণে সেদিন নাস্তিক্যবাদীরা ঢাবি’র প্রাণরসায়ন বিজ্ঞানের মেধাবী ছাত্র আব্দুল মালেক এর উপর নৃশংস হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করেন। তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতারা এই নৃশংস হত্যাকান্ডের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিলেও সময়ের ব্যবধানে এর সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তিরা আজ ক্ষমতার মসনদে সমাসীন। তিনি মেধাবী ছাত্র হত্যায় জড়িতদের রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে বাদ দিয়ে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দাবী জানান।
নগর উত্তর শিবির সেক্রেটারী আ স ম রায়হান’র পরিচালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন নগর উত্তর সভাপতি আহমেদ সাদমান সালেহ, শিবির নেতা হাসান এলাহী, আমান উল্লাহ, আবু জোবায়ের, আহসান উল্লাহ প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে আহমেদ সাদমান সালেহ বলেন শাসক শ্রেণির একঘেঁয়েমির কারণে স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও আমরা একটি দুর্নীতি মুক্ত জাতি গঠন করতে পারিনি। এর বিপরীতে শত প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে ছাত্রশিবির জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এমন একদল মানুষ তৈরি করছে যারা ধর্মীয় ও আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজেদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সততার অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হয়।
অনুষ্ঠানে শিবির নেতৃবৃন্দ দেশে প্রচলিত শিক্ষার সাথে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত নিজেদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে দ্বীন ইসলামকে নিজ জীবনে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে শহীদ আব্দুল মালেক সহ ঘাতকের হাতে নির্মমভাবে নিহত হওয়া সকলের আত্মার মাগফেরাত ও সর্বোচ্চ শান্তি কামনা করে মহান রবের দরবারে দোয়া-মোনাজাত করা হয়। প্রেসবিজ্ঞপ্তি