ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

ভারতে সোয়াইন ফ্লু, মায়ানমারে ম্যালেরিয়া: ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

সোয়াইন ফ্লু মহামারীতে ধুঁকছে ভারত। অপরদিকে ওষুধ প্রতিরোধী ম্যালেরিয়া দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ছে মায়ামনমার জুড়ে। এই দুই পার্শ্ববর্তী দেশে দুই ভয়ঙ্কর ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া স্বভাবতই ঝুঁকিতে ফেলেছে বাংলাদেশকে। সোয়াইন ফ্লু সাধারণত ছড়িয়ে থাকে শুকরের মাধ্যমে। সোয়াইন ইনফ্লুয়েঞ্জ ভাইরাস (এসআইভি) গ্রুপে পরিচিত ভাইরাসগুলো হল- H1N1, H1N2, H2N1, H3N1, H3N2 এবং H2N3। পৃথবীর যেসকল অঞ্চলে শুকরের সন্ধান মেলে, সেসকল অঞ্চলেই এই ভাইরাসের বিচরণ। তবে শুকরের দেহ থেকে মানবদেহে এর স্থানান্তর মোটেই কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়। তবে মানবদেহে স্থানান্তরিত হলে এই ভাইরাস প্রতিরোধে রক্তে এক ধরণের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। যেসকল মানুষ নিয়মিত শুকরের সংস্পর্ষে থাকে, তারাই মূলত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকে। আক্রান্ত রোগীর লক্ষণগুলোর মাঝে থাকে- শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া, জ্বর, গলা ব্যাথা, মাংসপেশীতে ব্যাথা, মারাত্মক মাথাব্যাথা, কফ, দূর্বলতা এবং অস্বস্তি। ২০১০ সালের আগস্টে পৃথিবী সোয়াইন ফ্লু’র প্রাদুর্ভাব মুক্ত বলে ঘোষণা দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সম্প্রতি ভারতে সোয়াইন ফ্লু মহামারীতে নিহত হয়েছে অন্তত ৭শ’ মানুষ। এছাড়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে অন্তত ১১ হাজার মানুষ। শুধু তাই নয়, দ্রুত ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে সোয়াইন ফ্লু। টাইমস অব ইন্ডিয়া রোববার তাদের সংবাদে জানায়, ভারতের নাগাল্যান্ডেও শুরু হয়েছে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। ইতোমধ্যে কহিমা সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসারত দুই রোগীর রক্তের নমূনায় এই ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। জানা গেছে, চেন্নাইয়ে কর্মরত এক নারী নাগাল্যান্ডে ফেরার পরপরই এই ভাইরাস সেখানে ছড়াতে শুরু করেছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই নারী বিমানযোগে চেন্নাই থেকে নাগাল্যান্ড যান। সেখানে পৌঁছার পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে তার রক্তের নমূনা পরীক্ষায় ধরা পড়ে সোয়াইন ফ্লু। ভারত বাংলাদেশের পাশ্ববর্তী দেশ। বাংলাদেশ সীমান্তের তিনদিক জুড়েই ভারত। সীমান্তবর্তী মেঘালয়ার পারেই নাগাল্যান্ডের অবস্থান। দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ বেশ সহজ হওয়ায় হরহামেশাই বিভিন্ন পথে যাতায়াত ঘটে থাকে। ফলে ভারত থেকে সোয়াইন ফ্লু বাংলাদেশে ঢুকে পড়া খুবই স্বাভাবিক। অপরদিকে মায়ানমার-ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় সনাক্ত হয়েছে ওষুধ প্রতিরোধী ম্যালেরিয়া জীবাণু। এই জীবাণু মূলত স্ত্রী অ্যানোফিলিশ জাতীয় মশার মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। ম্যালেরিয়া জীবাণুর জীবণচক্রের সূত্রপাত মশকদেহে ঘটে থাকলেও তার পূর্ণতা পায় মানবদেহে প্রবেশের মাধ্যমে। মশার কামড়ের মাধ্যমে এই জীবাণু প্রথমে রক্তে এবং তারপর যকৃতে আক্রমণ করে থাকে। এবং যকৃতেই এই জীবাণুর যৌবনদশা প্রাপ্তি ঘটে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না নিলে এই রোগে মানুষের মৃত্যু ঘটাও অস্বাভাবিক কিছু না। নতুন সনাক্ত হওয়া এই ভাইরাসের ওষুধ প্রতিরোধী ক্ষমতার কারণে তা প্রতিহত করা বর্তমানে একপ্রকার অসম্ভব। আর একারণেই বিজ্ঞানীরা একে ‘বিরাট হুমকি’ বলে অভিহিত করেছেন। বিশেষজ্ঞরা এই প্রাদুর্ভাবকে ‘ভীতিকর’ বলেও মন্তব্য করেছেন। ২০০০ সালের পর থেকেই বিশ্বে ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর হার অর্ধেকে নেমে এসেছে এবং বর্তমানে প্রতি বছর এই সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ ৮৪ হাজার। কিন্তু নতুন সনাক্ত হওয়া ওষুধ প্রতিরোধী ম্যালেরিয়া জীবাণু আবারো প্রাণহানীর সংখ্যা বৃদ্ধির শঙ্কা জাগিয়েছে। ইতোমধ্যে এই ম্যালেরিয়া জীবাণু কলম্বিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং সবশেষে মায়ানমার পর্যন্ত ছড়িয়েছে। মায়ানমারের ৫৫টি শহরের ৯৪০ জন মানুষের রক্তের নমূনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এই জীবাণু পুরো দেশজুড়েই প্রায় ছড়িয়ে পড়েছে। সাগেইং অঞ্চলের রক্তের নমূনা পরীক্ষা থেকে জানা গেছে, ভারত সীমান্ত থেকে এই জীবাণু এখন মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। চীনে প্রস্তুত ওষুধ আর্টামাইসিনিন বর্তমানে স্বল্পমূল্যের এবং ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী। কিন্তু নতুন এই জীবাণুর ওপর এই ওষুধের কোনো প্রভাবই কাজ করছে না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের আশঙ্কা, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় এই জীবাণু খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়বে। বিশেষ করে মায়ানমার থেকে ভারত এবং এরপর বাংলাদেশ, নেপালেও প্রাদুর্ভাব ঘটবে এই ওষুধ প্রতিরোধী ম্যালেরিয়ার। সর্বপ্রথম ওষুধ প্রতিরোধী ম্যালেরিয়া জীবাণু সনাক্ত হয় কলম্বিয়া-থাইল্যাণ্ড সীমান্তে ১৯৫৭ সালে। এর ১৭ বছর পর ১৯৭৪ সালে এটি আফ্রিকায় সনাক্ত হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে খুব কম ব্যবস্থাই নেওয়া হয়ে থাকে বলে এই অঞ্চলে এটি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি। তাদের মতে, এই অঞ্চলে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের চেয়ে রোগ সারানর দিকেই বেশি মনযোগ দেওয়া হয়ে থাকে।

লেখকঃ রাজিউল হাসান

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print