
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
সীতাকুণ্ডের বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের অগ্নিকাণ্ডে এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রায় ২ হাজার বার (শতক) জমির পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
আজ বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে উপজেলার বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের বারৈগ্রামে পানবরজে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
আগুনে এলাকার ৫৪ পানচাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ এক কোটি টাকারও বেশি ছাড়িয়ে যাবে বলে স্থানীয়রা জানান। তবে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত সেটা জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের সীতাকুণ্ড ও কুমিরা ইউনিট ঘটনাস্থলে গেলেও পানির সুবিধা না থাকায় তারা কিছুই করতে পারেনি।
স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে বালতিসহ বিভিন্ন পাত্রে পানি সংগ্রহ করে প্রায় একঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরমধ্যে ৫৪ পানচাষির প্রায় ২ হাজার বার (শতক) পানবরজ আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত পানচাষিদের মধ্যে বাবুল দে, স্বপন দাশ, মিলন সেন, হারাধন পাইক, সমীর দে, মৃদুল সিকদার, উষা কান্তি সিকদার বলেন, আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনের রাস্তা এই পানবরজ। আমরা অনেকেই বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে পান চাষ করেছিলাম। এখন কীভাবে আমরা ঋণ শোধ করব বা আবার ক্ষতিগ্রস্ত বরজগুলো কীভাবে মেরামত করব তা ভেবে পাচ্ছি না। এ অবস্থায় সরকারিভাবে কিছুটা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা হলে পুনরায় আমরা বরজ তৈরি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়েপরে বেঁচে থাকতে পারব।
পানচাষি স্বপন দাশ বলেন, আমাদের পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে পানবরজের আয় দিয়ে। প্রতিদিন পানের বরজে কাজ করি আর বরজের ছোট পানগুলো বিক্রি করে সংসার চালাতাম। বড় পানগুলো রেখে দিয়েছিলাম ভালো দাম পাওয়ার আশায়। কিন্তু এই অগ্নিকাণ্ডে আমার সব বিনিয়োগ পুড়ে ছাই হয়ে গেল।
বারৈয়াঢালা পান চাষী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম ও সাধারণ সম্পাদক রতন সেনগুপ্ত জানান, এখানকার মানুষের উপার্জনের প্রধান পান চাষ। এঅগ্নিকান্ডে পানচাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ৪০মিনিটেই আগুনে সব পুড়ে চাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হবে।
সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা ওয়াসি আজাদ বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েও কিছু করতে পারেনি। অগ্নিকান্ডের আশপাশ এলাকায় খালগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় পানির সমস্যা ছিল। এছাড়া যাতায়াতে রাস্তা সরু থাকায় ঘটনাস্থলে গাড়ি যেতে পারেনি।
এব্যাপারে সীতাকুণ্ড ইউএনও মিল্টন রায় বলেন, আমার অফিসে লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করার চেষ্টা করছি। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের তালিকা করা হচ্ছে। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সেটা নিরূপণ করা হবে।
বারৈয়াঢালা ইউপি চেয়ারম্যান রেহান উদ্দিন রেহান বলেন, এ অগ্নিকাণ্ডে পানচাষিদের এবং এলাকার মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। এই অঞ্চলের অর্থনীতি নির্ভর করে পান চাষের ওপর। এই ক্ষতি সহজে পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে না।