পাবলিক পরীক্ষা হিসেবে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা গ্রহণ কেন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা নিয়ে জারি করা পরিপত্র কেন বাতিল করা হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
শিক্ষা সচিব, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব এবং ভিকারুন্নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৮ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেসুর রহমান।
পরে আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, ১৯৬১ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধ্যাদেশ অনুযায়ী এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা ছাড়া অন্য কোনো পাবলিক পরীক্ষার কথা বলা নেই। কোনো আইনগত কর্তৃত্ব ছাড়াই ২০১০ সালের ১০ মার্চ এ পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রীসভা। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একই বছর ১৫ জুন একটি পরিপত্র জারি করা হয়। এই পরিপত্র জারি কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হিসেবে বাতিল করা হবে না, আদালত তা জানতে চেয়েছেন। একইসঙ্গে ওই পরীক্ষা কেন বাতিল করা হবে না সেটিও আদালত জানতে চেয়েছেন।
রিট আবেদনে বলা হয়, ১৯৬১ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধ্যাদেশে এ ধরনের পরীক্ষার কথা বলা না থাকলেও সরকার প্রজ্ঞাপণের মাধ্যমে জেএসসি পরীক্ষা চালিয়ে আসছে। এতে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ বাড়ার পাশাপাশি কোচিং বানিজ্য বাড়ছে। যার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে ২০০৯ সালে পঞ্চম শ্রেণিতে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার প্রচলণ হয়। পরের বছর মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য চালু হয় ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা। আর ২০১০ সালের ১৫ জুন জারি করা এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদাভাবে আয়োজন করা হচ্ছে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা।
প্রাথমিক স্তর অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বছর থেকেই পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা উঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও ২৭ জুন তাতে অসম্মতি জানায় মন্ত্রীসভা। জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করে গত ১৮ মে তা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত করে সরকার।